আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকে বসা নিয়ে এখনো আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর বৈঠক সফল হলে উনকে ক্ষমতায় থাকার নিশ্চয়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু সফল না হলে উনের পরিণতি লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির মতো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।
পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক দশকের যে বিরোধ, গত কয়েক মাসে তা অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। বিরোধ ভুলে একসঙ্গে চলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে সম্প্রতি বৈঠক করেছেন দুই কোরিয়ার শীর্ষ নেতা। এ ছাড়া আগামী ১২ জুন সিঙ্গাপুরে ঐতিহাসিক বৈঠকে বসার কথা ট্রাম্প ও উনের। কিন্তু গত কয়েক দিনে বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে যুক্তরাষ্ট্র একতরফা চাপ দিচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে বৈঠক থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
এ ছাড়া ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের একটি মন্তব্যও উত্তর কোরিয়াকে চটিয়েছে। সম্প্রতি বোল্টন বলেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে ‘লিবিয়া মডেল’ প্রয়োগ হতে পারে। উল্লেখ্য, লিবিয়ায় ন্যাটো সমর্থিত বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছিল।
এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে ‘লিবিয়া মডেল’ নিয়ে ট্রাম্পের কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন উত্তর কোরিয়া ইস্যু ভাবি, তখন আমরা মোটেও লিবিয়া মডেল নিয়ে চিন্তা করি না। কিম যেখানে আছেন, সেখানেই থাকবেন। তিনি নিজের দেশ চালাবেন। তাঁর দেশ অনেক সমৃদ্ধ হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, ‘লিবিয়ায় গাদ্দাফিকে নিয়ে যে মডেল ছিল, সেটা ছিল আলাদা। আমরা সেখানে গিয়েছিলাম তাঁকে (গাদ্দাফি) অপসারণ করতে।’ পরের বাক্যে অবশ্য ট্রাম্প বলেন, ‘এখন (উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে) কোনো চুক্তি না হলে ওই মডেল প্রয়োগ হতে পারে। কিন্তু আমরা একটা চুক্তি করতে পারলে, আমি মনে করি, তা হবে কিমের জন্য অনেক আনন্দের।’
ট্রাম্প ও উনের আগামী ১২ জুনের সম্ভাব্য ঐতিহাসিক বৈঠকটি হবে কি না, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা থাকলেও বৈঠকের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। ট্রাম্প জানান, বৈঠক নিয়ে তিনি এখনো আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া বৈঠক নিয়ে এখনো আমাদের সঙ্গে যেভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে, তাতে মনে হচ্ছে কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি।’ ট্রাম্প বলেন, ‘বৈঠকটি কখন, কোথায়, কতক্ষণ হবে, সেসব নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা চলছে।’
উল্লেখ্য, বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরির কারণ হিসেবে সম্প্রতি জাপানের ‘আসাহি’ সংবাদপত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র পিয়ংইয়ংকে একটি দাবির কথা জানিয়েছে। সেটা হলো, উত্তর কোরিয়াকে ছয় মাসের মধ্যে কিছু পরমাণু অস্ত্র, আন্ত মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য পরমাণু যন্ত্রপাতি জাহাজে করে অন্য কোনো দেশে সরিয়ে নিতে হবে। আর এ দাবি মানলে উত্তর কোরিয়াকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার প্রতিশ্র“তি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এ ধরনের শর্ত ইতিবাচকভাবে নেয়নি উত্তর কোরিয়া।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি