নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের উপকূলীয় এলাকায় অসময়ে বৃষ্টিপাত হওয়ায় মাঠ পর্যায়ে লবণ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তাই এবার লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে এই মুহূর্তে ফের লবণ উৎপাদন শুরু করা না গেলে চাষিদের লোকসানের পাশাপাশি তা দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেনেএই খাতের বিশ্লেষকরা।
সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন ধরে উপকূলীয় এলাকায় বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। প্রায়শ আকাশে মেঘের পাশাপাশি থেকে থেকে ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে রোদের উপর নির্ভরশীল চাষিদের মাঠ গুটিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। আকাশে একটু রোদ হলেই চাষিরা মাঠে উৎপাদন কার্যক্রমে হাত দিচ্ছেন। তবে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর আর লবণ উৎপাদনে সফল হয়নি চাষিরা। মাঠ পর্যায়ের চাষি মাহমুদুল করিম জানান, অগ্রিম ভাড়া নিয়ে দুই একর জমিতে চাষ করলেও এখনও উৎপাদন খরচে ঘাটতি রয়েছে তার।
এদিকে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন জানায়, এবার লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় উৎপাদন কম হয়েছে। করপোরেশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক দিলদার আহমদ চৌধুরী জানান, সরকার এবার সারা দেশে লবণের মোট চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ১৬ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন। বিসিকের হিসাব মতে গত সপ্তাহে বৃষ্টি পর্যন্ত দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছে ১৪ লাখ ৮৩ হাজার মেট্রিক টন। অপরদিকে চলতি মৌসুমে লবণের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ লাখ মেট্রিক টন। এদিকে উৎপাদন মৌসুমে হটাৎ প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রতিকূল হয়ে উঠার বেশ কয়েকদিন পার হওয়ার পরেও শুষ্কতা ফিরে না আসায় অনেক চাষি হতাশায় চাষ গুটিয়ে রেখেছেন।
স্থানীয় পর্যায়ে লবণ উৎপাদন ও ব্যবসার সাথে জড়িত বড় মহেশখালীর জাহেদুল হক নাহিদ জানান, এবার চাষিরা সার্বিকভাবে লোকসানে আছে। মিল মালিক ও মজুদদারের সিন্ডিকেটের কারণে ব্যবসায়ও সফল হওয়া যায়নি। তবে অতীতের মতো ঘাটতি দেখিয়ে বিদেশ থেকে লবণ আমদানি হলে চাষিদের সর্বনাশ হবে।
একই কথা জানিয়েছেন মাতারবাড়ির ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ। তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে চাষিদের সবক’টি আধারে গত মৌসুমের বিপুল লবণ মজুদ আছে। ফলে এই মুহূর্তে উৎপাদন না হলেও দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
অবশ্য আবহাওয়া অফিস আশা করছে দু’তিনদিন পর থেকে আবহাওয়া শুষ্ক হয়ে লবণ চাষের উপযোগী হয়ে উঠবে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ