নিজস্ব প্রতিবেদক:
ধারাবাহিক দরপতন আর লেনদেন খরায় অনেকটাই নিষ্প্রাণ হয়ে পড়েছে শেয়ারবাজার। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুরোর জন্য সরকারের দেয়া বিশেষ সুবিধা এবং ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনের দুই প্রতিষ্ঠান শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জেকে পাওয়ার মতো সুখবরেও প্রাণ ফিরছে না বাজারে।
ক্রমগত দরপতনে একটু একটু করে পুঁজি কমছে বিনিয়োগকারীদের। ফলে আবারও পুঁজি হারানোর সঙ্কায় ভুগছেন বিনিয়োগকারীরা। কেউ কেউ দরপতনকে বিনিয়োগকারীদের রক্ত ক্ষরণ হিসেবে উল্লেখ করছেন। পুঁজি হারানোর শঙ্কার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকটও ভর করেছে।
মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত কয়েক কার্যদিবসের মতো মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা ১০ কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকল শেয়ারবাজার।
এদিন প্রধান মূল্য সূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম বেড়েছে। কিন্তু লেনদেনে অংশ নেয়া অন্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগের দরপতন হয়েছে। ফলে সবকটি সূচকেরই পতন হয়েছে। অবশ্য ব্যাংকের কল্যাণে মূল্য সূচক বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ১২৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৫২টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৯টির।
বাজারে লেনদেন হয়েছে ৩৫৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৩০ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৪৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দু’টি মূল্য সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৭২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক দশমিক ২৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩০০ পয়েন্টে।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপয়ার্ডে শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- লিগাসি ফুটওয়ার, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, বিএসআরএম, আরডি ফুডস, মুন্নু সিরামিক, বিবিএস কেবলস এবং লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএসসিএক্স ১৪ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৩৪৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারে লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৩২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৮টির দাম বেড়েছে। দাম কমেছে ১২১টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টির।
বিনিয়োগকারী মনির হোসেন বলেন, প্রতিদিন শেয়ারের দাম কমছে আর একটু একটু করে আমাদের রক্তা ক্ষরণ হচ্ছে। ক্রমেই বিনিয়োগ করা পুঁজি ফুরিয়ে আসছে। দিনের পর দিন টানা দরপতন হচ্ছে কিন্তু শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্টরা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে পথে বসতে হবে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ