২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:৪০

বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত কোচিং করার প্রবণতা বাড়ছে : জিইএম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গৃহশিক্ষাকতা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এটি শিক্ষার সমতাকে ব্যাহত করে। এতে করে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়ায়। বাংলাদেশেও প্রতিনিয়ত গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া ও কোচিং করার প্রবণতা বাড়ছে বলে ইউনেস্কোর সর্বশেষ গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং (জিইএম) রিপোর্টে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোতে (ব্যানবেইস) এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। বিশ্বের ২০৫টি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর পরিচালিত এ জরিপটি করা হয়েছে। এবারের প্রতিবেদনের প্রতিপাদ্য হলো- ‘শিক্ষায় জবাবদিহীতা : আমাদের দায়বদ্ধতা পূরণ’।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে গৃহশিক্ষাকতা বেড়ে যাচ্ছে। ক্লাসে শিক্ষকরা পাঠদান অসম্পন্ন রেখে কোচিং বা গৃহশিক্ষক হিসেবে পড়াচ্ছেন। এতে করে শিক্ষার সঠিক লক্ষ্য ব্যহত হচ্ছে। ক্লাসে শিক্ষার্থীরা অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশসহ এটা বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৭ সালে গৃহশিক্ষকতায় বৈশ্বিক বাজারে ২২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি ব্যয় দাঁড়াবে বলে আসংঙ্কা করা হচ্ছে।

শিক্ষায় অর্থায়নের বিষয়ে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালে শিক্ষা কর্ম-রূপরেখার প্রস্তাব হলো- শিক্ষার ব্যয় হবে মোট দেশীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ৪ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও শিক্ষা খাতে ব্যয় জিডিপি ২ শতাংশের নিচে রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে দেশের সুশীল সমাজ ও শিক্ষাবিদরা শিক্ষা খাতে জিডিপি ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানালেও সরকার এখনও প্রতি বাজেটে আশানুরূপ বরাদ্দ বাড়াচ্ছে না।

অন্যদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে পালালে জেল ও অর্থ জরিমানা করা হচ্ছে। স্কুল পালানোর শাস্তি হিসেবে ফ্রান্সে দুই বছর, সিঙ্গাপুরে ১ বছর, দক্ষিণ আফ্রিকায় ছয় মাস, বেলজিয়ামে এক মাসের জেল দেয়া হয়। এছাড়া ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে এ কারণে মোটা অংকের অর্থ জরিমানা গুনতে হয়। অনেক দেশে পারিবারিক শিশু ভাতাও বন্ধ করে দেয়া হয়।

প্রতিবেদন প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ইউনেস্কোর প্রতিবেদনের মাধ্যমে বৈশ্যিক শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন ইতিবাচক ও নেতিবাচক বিষয় উঠে এসেছে। এখানে ২০৫টি দেশের ওপর জরিপ চালিয়ে ইউনেস্কো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনের আলোকে বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে আমরা মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করছি। আমরা চাইলেই রাতারাতি কোনো পরিবর্তন আনতে পারি না। ধারাবাহিকতার মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হয়। আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বাজেটের ১৫ শতাংশ ও জিডিপির ৪ শতাংশ ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। বাংলাদেশে এখনও জিডিপির ২ শতাংশের নিচে এবং মোট বাজেটের ১৫ শতাংশের অনেক নিচে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যদিও শতাংশের দিক থেকে শিক্ষা ক্ষেত্রে তেমন বরাদ্দ না বাড়লেও অর্থ পরিমাণের দিক থেকে বাড়ছে। যে অর্থ বরাদ্দ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ হচ্ছে তা যেন অপচয় না হয় সেটি নিশ্চিত করতে পারলে আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারব।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ইউনেস্কোর কর্মকর্তা, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ সংস্থা ও দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :মে ১৫, ২০১৮ ৩:৪১ অপরাহ্ণ