২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:১৬

কাঁচা অপরিপক্ব আম স্প্রে দিয়ে পাকানোর অভিযোগে আম জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কাঁচা অপরিপক্ব আম স্প্রে দিয়ে পাকানোর অভিযোগে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের আমের আড়তের ৪০০ মন আম জব্দ করে ধ্বংস করেছে র‌্যাব। এছাড়া আমে ক্ষতিকারক ইথোফেন হরমোন স্প্রে করার দায়ে আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে (সর্বনিম্ন ১ মাস ও সর্বোচ্চ ৩ মাস) কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এক অভিযানে এসব শনাক্ত ও ধ্বংস এবং অভিযুক্তদের সাজা দেয়া হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। সরেজমিন অভিযানে গিয়ে দেখা গেছে, আড়তের অধিকাংশ আম বাহিরে হলুদ হলেও সেগুলোর ভেতরে সবুজ। অপরিপক্ব অবস্থায় সরকার নির্ধারিত তারিখ না মেনে এগুলো আড়তে আনা হয়েছে। আমগুলো স্বাদে টক।

ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রথমে আড়তের কয়েকটি কার্টনের আম পরীক্ষা করে ইথোফেন হরমোন স্প্রের অস্তিত্ব পায়। মানবদেহের জন্য এই স্প্রে ক্ষতিকর হওয়ায় আমগুলো ধ্বংসের নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট। পরে সিটি কর্পোরেশনের বুলডোজার দিয়ে এগুলো ধ্বংস করা হয়।

ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, সারা দেশের জেলাগুলোতে আম পাড়ার জন্য সরকার তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে তারা গোপনে এসব অপরিপক্ব আম সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠাচ্ছে। এসব আমে স্প্রে করার দায়ে আটজনকে সর্বনিম্ন ১ মাস ও সর্বোচ্চ ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইথোফেন একটি হরমোন স্প্রে। এটি জমিতে ব্যবহার করা হয়, কিন্ত অভিযুক্তরা সরাসরি আমে ব্যবহার করেছে। এই আম খেলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, মাত্রাতিরিক্ত ইথোফেন মানবদেহে প্রবেশ করলে ক্যান্সার ও কিডনি নষ্টসহ মৃত্যুর আশংকা থাকে।

‘আম ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ী, আগামী ২০ মে থেকে বাজারে আসবে সব ধরনের গুটি আম। এরপর ২৫ মে গোপালভোগ, হিমসাগর ও ক্ষিরসাপাতি ২৮ মে বাজারে আসবে। আগামী ১ জুন লক্ষণভোগ, ৫ জুন ল্যাংড়া ও বোম্বায়, ১৫ জুন আমরূপালি, ফজলী ও সুরমা ফজলী বাজারে আসবে। মৌসুম শেষের আশ্বিনা আসবে ১ জুলাই থেকে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে আম উৎপাদন হচ্ছে প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হচ্ছে বৃহত্তর রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। গত ৭ বছরে এ অঞ্চলে আমের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। গত বছর এ অঞ্চলের ১৭ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। সেখানে উৎপাদন হয়েছে এক লাখ ৮১ হাজার ১০৭ টন।

উৎপাদন ছাড়িয়ে গেলেও গত অর্থবছরে সেইভাবে গতি পায়নি আম রফতানি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিশ্ববাজারে ৩ লাখ ২৪ হাজার কেজি আম সরবরাহ করে বাংলাদেশ। কিন্তু রাজশাহীর রফতানিযোগ্য ১৫ হাজার টনের মধ্যে রফতানি হয়েছে মাত্র ২৩ টন আম।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :মে ১৫, ২০১৮ ২:৩১ অপরাহ্ণ