নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সৃষ্ট যানজটের কারণে পণ্যবাহী গাড়ী ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণ। দেখা দিয়েছে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত গাড়ী সংকট। যানজটের কারণে ২/৩ দিন পণ্যবাহী গাড়ী রাস্তায় অবস্থান করতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও গাড়ী পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বাজারে চালসহ অন্যান্য পণ্যের মূল্যে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।
পণ্য পরিবহণ মালিক সমিতির নেতারা জানান, যানজটের কারণে অন্যান্য জেলা থেকে চট্টগ্রামে আবার চট্টগ্রাম থেকে বাইরে ভাড়া নিয়ে চালকরা যেতে চাচ্ছে না। শুধু পণ্যবাহী গাড়ীই নয়, যাত্রীবাহী বাসের যাত্রা কমে যাওয়ায় রেল ও বিমান পথে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। চট্টগ্রামে চালের যোগান উত্তরাঞ্চল থেকে আনা চালের উপর নির্ভরশীল। প্রতিদিন সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর,নওগাঁ থেকে শতাধিক গাড়ী চাল চট্টগ্রামে আসে। গত কয়েকদিন যাবত চলমান যানজটে চাহিদা অনুপাতে চাল আসছে না। পণ্য পরিবহনের জন্য গাড়ীও মিলছে না।
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি বাজারে চালের বাজার কমতির দিকে ছিল। এখন মহাসড়কে যানজটের কারণে চালের বাজার আবার উর্ধ্বমূখী হয়ে উঠেছে। চাহিদা অনুপাতে চাল আনা যাচ্ছে না। গাড়ী ভাড়া ৪/৫ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। চাল ছাড়া অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দামেও বিরুপ প্রভাব পড়েছে।’
পণ্য পরিবহন সমিতি সূত্র জানায়, পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ভাড়া নির্ধারিত নেই। স্বাভাবিক অবস্থায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দৈনিক প্রায় ৩০ হাজার বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আসা-যাওয়া করে। চাহিদার উপর ভাড়া নির্ভর করে। গাড়ীর চাহিদা বেশী থাকলে আর গাড়ীর পরিমাণ কম থাকলে ভাড়া বেড়ে যায়। এখন চাহিদা অনুপাতে গাড়ী পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন স্থানে গাড়ী আটকা পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে বৃহত্তর চট্টগ্রাম পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশনের মহাসচিব মোহাম্মদ আবু মোজাফ্ফর বলেন, পণ্যবাহী গাড়ী ভাড়া দ্বিগুণ বেড়েছে। ১৭/১৮ হাজার টাকার ভাড়া এখন ৩০/৩২ হাজার টাকা হয়েছে। যানজটের কারণে ২/৩ দিন গাড়ী রাস্তায় অবস্থান করতে হচ্ছে। চালকরা ভাড়া নিয়ে যেতে রাজী হচ্ছে না। মহাসড়কের কয়েক জায়গায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আজিজুল হক বলেন, রবিবার রাত ১২ টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে আমার একটি কাভার্ডভ্যান যাত্রা করেছে। সোমবার বিকেল পৌনে ৬টায় সেটি ফেনীতে পৌঁছেছে। এভাবে প্রতিটি গাড়ী যানজটের কবলে পড়েছে।’ বাণ্যিজিক গুদাম ব্যবসায়ীদের সংগঠন চট্টগ্রাম ঠিকাদার ও কমিশন এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আলী আহমেদ বলেন, বাণিজ্যিক গুদাম থেকে পণ্য গুলো মহাসড়ক হয়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে নেয়া হয়। গত এক সপ্তাহ যাবত অসহনীয় যানজটের কারণে গুদাম থেকে পণ্য ডেলিভারী কমে গেছে। পণ্যের মধ্যে রয়েছে সার ও বিভিন্ন প্রকারের ভোগ্যপণ্য।’
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, সীমান্তের স্থল বন্দর থেকে প্রতিদিন ১৭/১৮ গাড়ী পেঁয়াজ চট্টগ্রামে আসে। যানজটের কারণে গাড়ী চট্টগ্রামে পৌঁছাতে একদিন দেরী হচ্ছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি