বরিশাল প্রতিনিধি:
মাদরাসার জমি দখলে বাধা দেয়ায় এবং পরিচালনা কমিটিতে জায়গা না পেয়ে বারিশালের বাকেরগঞ্জে আবু হানিফ (৫০) নামের এক মাদরাসার সুপারকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এসময় লাঞ্ছনাকারীরা ওই শিক্ষকের মাথায় মল ঢেলে দিয়ে তা ভিডিও করে তাকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে গত শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। লাঞ্ছনার শিকার আবু হানিফ কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসার সুপার ও নেছারবাগ বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম। এই ঘটনায় মিঞ্জু হাওলাদার ও বেল্লাল হোসেনসহ দু’জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। ঘটনার শিকার কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার প্রধান শিক্ষক আবু হানিফ বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে এই মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলো- জাহাঙ্গীর খন্দকার, আবু হানিফার ছোট ভাই জাকির হোসেন জাকারিয়া, মো. মাসুম সরদার, মো. এনামুল হাওলাদার, মো. রেজাউল খান, মো. মিনজু, সোহেল খন্দকার ও মিরাজ হোসেন।
মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাঠালিয়া ইসলামিয় দারুসসুন্নাহ দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আবু হানিফা সভাপতি প্রার্থী এইচ এম মজিবর রহমানের পক্ষ নেন। নির্বাচনে মজিবর রহমান বিজয়ী হলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকার মাদরাসা সুপার আবু হানিফার উপর ক্ষুব্ধ হন। এরপর থেকেই তাকে বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিলো জাহাঙ্গীরও তার সহযোগীরা।
গত ১১ মে শুক্রবার ফজরের নামাজের পর হাঁটতে বের হন আবু হানিফা। এসময় অভিযুক্তরা তার পথ রোধ করে। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে অভিযুক্তদের একজন তাঁর মাথার টুপি ও কাঁধের রুমাল খুলে নেয়। এরপর একজন তার হাত ধরে অপর আরেকজন তার মাথায় মল ঢেলে দেয়। সেই মল আবার মাথায় ভালো করে মাখিয়ে দিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে লাঞ্ছনাকারীরা। পরে এই দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয় অভিযুক্তরা।
এদিকে, মাদরাসা সুপার ও মসজিদের ইমামকে অপমান-লাঞ্ছিত করার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় বাসিন্দা মো. হাবিব জানান, মাদরাসার জমি নিয়ে বিরোধ ও পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর ও তার সহযোগীরা মিলে মাদরাসার সুপারের মাথায় মল ঢেলে দেয়।
লাঞ্ছনার শিকার মাদরাসা সুপার আবু হানিফ জানান, সংর্ঘবদ্ধ এই জামায়াতের লোকগুলো একত্রিত হয়েই ১১/৫ শুক্রবার দিন মসজিদ থেকে বাহির হওয়ার পর তারা আমাকে লাঞ্ছিত ও ঘৃণিত কাজটি করেছে। আমি এর সুবিচার চাই। বাকেরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল হক জানান, মামলা দায়েরের পর দু’জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি