অর্থনীতি ডেস্ক:
দেশের ৪৭ তম বাজেটে অগ্রাধিকার পাচ্ছে মানব সম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাত। আগামী ৭ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করবেন।
বুধবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সদস্যদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
মুহিত বলেন, ‘এবারের বাজেটে মানব সম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও স্যানিটেশন খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তবে বরাদ্দ বেশি থাকবে পরিবহন ও জ্বালানী খাতে। ৩০ জুন বাজেট পাস হবে।’
আগামী বাজেটের আকার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেটের আকার ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার মত হবে। আগামী ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে সেটি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। তবে এই ফিগারকে (হিসাব) স্ট্যান্ডার্ড ধরে আকার চূড়ান্ত করা হবে।’
বাজেটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভূক্তিতে অর্থ বরাদ্দ থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবারের বাজেটে এমপিওখাতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে সেটি কেবল শিক্ষকদের বেতনের জন্য নয়। প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যয়ও এর মধ্যে থাকবে।
তিনি জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করা হবে।এর অংশ হিসেবে এবার কিছু নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
এমপিও সংস্কারের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় খুব বেশি আগ্রহী নয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটে স্কুল বাস নামানোর বিষয়ে ঘোষণা থাকবে।বর্তমানে দেশে করপোরেট ট্যাক্স বেশি। আগামী বাজেটে এটা কিছুটা কমানো হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছর শেষে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে। করপোরেট করহার এ বছরের বাজেটে পরিবর্তন (কমানো) করা হবে। তবে ট্যাক্সের পরিধি বাড়বে। আমরা আশা করছি, ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের ৫০-৬০ শতাংশ লোক ট্যাক্স দেবে।’
এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, আগামী বাজেট হবে, তার জীবনের শ্রেষ্ঠতম বাজেট। আগামী ৭ জুন তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে দ্বাদশতম বাজেট পেশ করবেন।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মুহিত বলেন, ‘চিনিশিল্প পুরোপুরি আখের ওপর নির্ভরশীল নয়।এই শিল্পকে ট্যারিফ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হয়। অথচ বিদেশ থেকে আমদানি করলেই আমরা এই চিনি কম দামে পেতে পারি। কাজেই আমার মতে, চিনিশিল্প রাখা উচিত নয়।’
আগামী বাজেটে করমূক্ত আয়সীমা কিছুটা বাড়ানো হতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত করেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আগামীতেও সরকার গঠন হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রবীন এই অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার আবারও ক্ষমতায় আসবে। এ বিষয়ে আমি দৃঢ় আশাবাদী। তখন স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে নতুন উদ্যমে কাজ হবে।’
টাকা পাচার নিয়ে যত হৈচৈ হয়,তত টাকা পাচার হয় না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ইআরএফের সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, অর্থসচিব মুসলিম চৌধুরী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ