আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেয়ার পর ইউরোপের পক্ষ থেকে এ চুক্তি বজায় রাখার জন্য ইরানকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহবান জানিয়েছেন। -খবর বিবিসি বাংলার।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় আমরা ইরানকে সংযম প্রদর্শনের জন্য উৎসাহ দিচ্ছি। এ চুক্তির আওতায় ইরানের দিক থেকে যেসব বাধ্যবাধকতা আছে, সেগুলো তারা যেন অবশ্যই মেনে চলে। এ চুক্তি বাতিলের ঘোষণায় হতাশা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউর ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রেডরিকা মঘরিনি বলেছেন, ইরান যতক্ষণ পর্যন্ত এ চুক্তির বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ততক্ষণ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে।
তবে আমেরিকার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরাইল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে। অন্যদিকে পরমাণু চুক্তি থেকে আমেরিকার সরে আসার ঘোষণায় ইরান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, তিনি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করলো যে তারা নিজেদের প্রতিশ্রুতির কোনো মর্যাদা রাখে না।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করবেন এবং এ চুক্তির পক্ষে যেসব মিত্র দেশগুলো আছে, তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। সবকিছু ইরানের জাতীয় স্বার্থের ওপর নির্ভর করবে বলে রুহানি উল্লেখ করেন। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস ট্রাম্পের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বারাক ওবামা যখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন সে সময় ইরানের সঙ্গে পৃথিবীর বৃহৎ শক্তিগুলো পরমানু চুক্তি করেছিল।
সে চুক্তির মূল বিষয় ছিল, ইরান পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ রাখবে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন ইরানের যে কোনো পরমাণু স্থাপনায় যে কোনো সময় পরিদর্শন করতে পারবে। অর্থাৎ ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইরানকে নজরদারির মধ্যে রাখতে পারবে। এর বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়া হয়েছিল।
চুক্তি থেকে আমেরিকার সরে আসার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটিকে মারাত্নক ভুল হিসেবে বর্ণনা করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওবামা বলেন, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ভালোভাবেই কাজ করছিল। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে যখন এ চুক্তি করা হয়েছিল, তখন সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। চুক্তি থেকে আমেরিকার প্রত্যাহারের ঘোষণায় কেরি বলেছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের মিত্রদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করবে।