নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী আব্দুল জব্বার। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে প্রচারিত অনেক উদ্বুদ্ধকরণ গানের গায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত তিনি। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। বলা চলে এখন মৃত্যুশয্যায়। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানা গেছে, তার কিডনির অবস্থা শোচনীয়, হার্টের ভাল্ব নষ্টসহ শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার চিকিৎসা করাতে ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা প্রয়োজন।
আব্দুল জব্বার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসাবাবদ ২০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। এখনও অনেক বড় অঙ্কের টাকা দরকার। কীভাবে জোগাড় হবে? যখন লাইফ সাপোর্টে থাকবো তখন দেখতে যাবেন! মারা গেলে শহীদ মিনারে নিয়ে ফুল দিবেন! দাফন করার সময় রাষ্ট্রীয় স্যালুট দিবেন! এইসবের আমার কিছু দরকার নেই। আমি আরও কিছুদিন বাঁচতে চাই।’
ইতোমধ্যে আব্দুল জব্বারের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর বড় ছেলে ও সানোয়ারা গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান। তিনি শিল্পীর চিকিৎসায় ৫ লাখ টাকাা দিয়েছেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আব্দুল জব্বার হারমোনিয়াম গলায় ঝুলিয়ে সারা কলকাতার বিভিন্ন ক্যাম্পে ক্যাম্পে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্ধুদ্ধ করেছেন। তখন স্বাধীন বেতারে করেছেন অসংখ্য গান। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আব্দুল জব্বার পুরো ভারতে বিভিন্ন স্থানে গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে গণসংগীত থেকে প্রাপ্ত ১২ লাখ টাকা স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন। তিনি স্বাধীনতা পদক, একুশে পদকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পদক অর্জন করেছেন।
‘ও..রে নীল দরিয়া’, ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘পিচ ঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি’ সহ অসংখ্য কালজয়ী গান আব্দুল জব্বারের গাওয়া। আব্দুল জব্বার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান তিনটি ২০০৬ সালে মার্চ মাস জুড়ে বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের বিচারে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২০টি গানের তালিকায় স্থান লাভ করেছে।
দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ