নিজস্ব প্রতিবেদক:
মৃত্যুর আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে একটি অনুরোধ করেছিলেন গুলিতে নিহত রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমার) সহ-সভাপতি শক্তিমান চাকমা। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমীতে খেলাঘর কেন্দ্রীয় আসরের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে একথা জানান ওবায়দুল কাদের।
আবেগাপ্লুত কাদের বলেন, ‘পাহাড়ে আজ যা ঘটছে এগুলো বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। আমার মায়ের মৃত্যুর পর আমার দু’চোখ ভরে জল এসেছে। আমি যখন পাহাড়ের এক তরুণ উপজেলা চেয়্যারম্যানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর পাই, তখনও তাই হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মর্নিং ওয়াকের সময় প্রায়শই তার (শক্তিমান) সঙ্গে আমার কথা হতো। আমাকে ফোন করত। গতকালও (বৃহস্পতিবার) ফোন করেছিল, আজ তার ফোন পাইনি। এই ছেলেটি কত যে ত্যাগী, কত যে সৎ আমি জানি!’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাকে বলেছিল পরশু দিন- ভাই, আপনার কাছে কিছুই চাওয়ার নাই। আমার জীবন ঝুঁকির মুখে। আমার মেয়েটা রাঙ্গামাটি মেডিকেলে পড়ে। ওখানে আমি কিছুতেই তাকে নিয়ে স্বস্তিতে থাকতে পারছি না। আমি নিজেও শহরে যেতে পারি না। নানিয়ারচর উপজেলায় থাকি। আমার একটা অনুরোধ- আমার মেয়েটাকে একটু রক্ষা করেন, চট্টগ্রাম অথবা ঢাকায় তাকে ট্রান্সফার করে দেন।’
স্মৃতিকাতর হয়ে তিনি বলেন, ‘মেয়ের জীবন ঝুঁকির মুখে বলল, আর গতকাল (বৃহস্পতিবার) তার জীবন শেষ হয়ে গেল। আর তার জন্য আজও ৪/৫জন মারা গেল!’ ওবায়দুল কাদের বলেন, শান্তির মধ্যে অস্থিরতা তৈরির জন্য একটা মতলবি মহল সক্রিয়। বাংলাদেশকে শেখ হাসিনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এটা অনেকের ইর্ষার কারণ। সোজা পথে পারে না, বাঁকা পথে আসে। আলোতে পারে না, অন্ধকারের আশ্রয় নেয়। রক্তপাতের আশ্রয় নেয়, ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়।
তিনি বলেন, চেতনাবিরোধী সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে ডালপালা বিস্তারে যারা সহায়তা করে এবং পৃষ্ঠপোষকতা করে, সেই অপশক্তি সক্রিয়। অপশক্তি সক্রিয় বলেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভিসির বাড়িতে ৭১’র নারকীয়তার পুনরাবৃত্তি হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ বছর অনেক অঘটন ঘটার পাঁয়তারা আছে, চক্রান্ত আছে। কারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন যখন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়, তখন চোরাগলি দিয়ে ক্ষমতার অলিন্দে প্রবেশ বেড়ে যায়। আমাদের দেশে নানান ঘটনা হচ্ছে।
খেলাঘর কেন্দ্রীয় আসরের চেয়ারপারসন অধ্যাপিকা পান্না কায়সারের সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, অধ্যাপক সামছুজ্জামান খান, নুরুর রহমান সেলিম, কামাল চৌধুরী, অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারি, শমী কায়সার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বজলুর রহমান ভাইয়া স্মৃতিপদক তুলে দেয়া হয় অধ্যাপক সামছুজ্জামান খান, কামাল চৌধুরী ও অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারির হাতে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি