নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর বাজারগুলোতে হঠাৎ করেই বেড়েছে কাঁচা পেঁপের দাম। গত সপ্তাহে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া এ সবজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। পেঁপের পাশাপাশি দামি সবজির তালিকায় রয়েছে বেগুন ও কাকরল। তবে তালিকায় শীর্ষে পেঁপে। শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে ঘুরে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।
গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৬০-৭০ টাকা হয়েছে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাকরল। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় কাকরলের দাম কেজিতে ৩০ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে কাকরল বিক্রি হয়েছে ৯০-১০০ টাকা কেজিতে। পেঁপে ও বেগুনের দাম হঠাৎ বাড়লে অন্যান্য সবজির দাম অনেকটাই স্থিতিশীল। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, আলু ও ডিমের।
পেঁপের অস্বাভাবিক দামের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, আড়তে হঠাৎ করেই পেঁপের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়ে গেছে। অনেক ব্যবসায়ী আড়তে গিয়ে পেঁপে কিনতে পারেননি। এছাড়া রোজারও একটি প্রভাব রয়েছে। বেগুনের দাম বাড়ার বিষয়ে একই তথ্য জানান তারা।
হাজিপাড়া বৌ-বাজারের ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে পেঁপে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ ৫০ টাকার নিচি বিক্রি করা সম্ভব না। আমরা তো ৫০ টাকায় বিক্রি করছি, অন্য বাজারে গিয়ে দেখেন ৭০ টাকা কেজি।
বাজারে সবজি কিনতে আসা মো.হাসান আলী পেঁপের দাম শুনেই বিস্ময় প্রকাশ করেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য একজনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা আজব দেশে বাস করছি। এক এক সময় এক এক জিনিসের দাম বেড়ে যায়। যেন দেখার কেউ নেই।
হাজিপাড়া বৌ-বাজার থেকে রামপুরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা পেঁপে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। পেঁপেরর এমন দামের বিষয়ে ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, পেঁপে চাহিদা সব সময় থাকে। তবে রোজার সময় চাহিদা বেশি থাকে। রোজা আসতে তো আর বেশি দেরি নেই, এ জন্যই হয়তো দাম বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কিছু পেঁপে আনতে পেরেছি অনেক ব্যবসায়ী আড়তে গিয়ে পেঁপে পাননি। বাজার ঘুরে দেখলেই বুঝতে পারবেন, কয়জনের কাছে পেঁপে আছে।
বেগুনের দামের বিষয়ে ব্যবসায়ী মান্নান হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে এক কেজি বেগুন ৪০ টাকা বিক্রি করেছি। আজ ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। রোজা কাছাকাছি চলে আসায় বেগুনের দাম বেড়ে গেছে। রোজার আগে এ সবজিটির দাম কমার তেমন সম্ভাবনা নেই।
খিলগাঁও তালতলা বাজারে গত সপ্তাহে ১০০ টাকা কেজি দরে কাকরল বিক্রি করা ব্যবসায়ী মো. কামাল বলেন, ১০০ টাকা থেকে কাকরল ৬০ টাকায় নেমে এসেছে। সমনে দাম আরও কমবে। কয়েক সপ্তাহ পর দেখবেন এ সবজি ৩০-৪০ টাকা কিজি বিক্রি হচ্ছে।
পেঁপে, বেগুন ও কাকরলের দাম বাড়তি থাকলেও অধিকাংশ সবজির দাম এখন স্বাভাবিক রয়েছে। ৩০ টাকা কেজির উপরে থাকা সবজির মধ্যে পটল বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বরবটি ও ঢেঁড়স। আগের সপ্তাহেও এই সবজিগুলোর দাম এমনই ছিল।
কিছুটা কম দামের সবজির মধ্যে লাউ আগের সপ্তাহের মতোই ২৫ থেকে ৩৫ টাকা পিচ বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো। সবজিটি ২০-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঝিঙা। এছাড়া আগের সপ্তাহের মতো শশা ২০-২৫ টাকা, ছোট আকারের কাঁচা মিষ্টি কুমড়া ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম বেড়েছে গাজরের। গত সপ্তাহে ২৫-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম বেড়ে এখন ৫০-৫৫ টাকায়।
লাল শাক, সবুজ ডাটা শাক, পাট শাক, কলমি শাক আগের সপ্তাহের মতো ৫-১০ টাকা আটিতে বিক্রি হচ্ছে। পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লাউ শাক। আর নতুন আসা মূলা শাক বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা আটি।
নতুন দেশি পেঁয়াজ আগের সপ্তাহের মতোই ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি। আর কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ