২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:২৮

রাখাইন পরিদর্শনে যাচ্ছে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল। সোমবার দলটির সেখানে যাওয়ার কথা বলে নিশ্চিত করেছেন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের সেখানে যাওয়ার কথা থাকলেও মিয়ানমার দাবি করেছিলো এখন উপযুক্ত সময় না।

জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রত্যাবাসন চুক্তি করলেও কার্যত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার শুরু করেনি তারা। চুক্তির পরও রাখাইনে গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুলডোজারে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের নজির। খবর মিলেছে সেখানে আদর্শ বৌদ্ধ গ্রাম নির্মাণ চলমান থাকার। এর মাঝেই রাখাইন পরিদর্শনে যাচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দল। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত আগস্টে রোহিঙ্গা সংকট তীব্র আকার ধারণ করার পর এটাই জাতিসংঘের সবচেয়ে উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি দলের রাখাইন সফর হবে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ৬ লাখ ৯২ হাজার রোহিঙ্গা। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় জাতিগত নিধনের আলামত খুঁজে পায়। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ অ্যাখ্যা দেয়। মিয়ানমার এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও রাখাইনে  আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ রাখে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি তারা জাতিসংঘকে সেখানে প্রবেশাধিকার দিতে বাধ্য হয়।

জাতিসংঘের প্রতিনিধি হিসেবে এপ্রিলের শুরুতে মিয়ানমার সফর করেনে সংস্থাটির মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থা (ওসিএইচএ) এর জরুরি ত্রাণবিষয়ক উপ সমন্বয়ক মুলার। ডি-ফ্যাক্টো সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিসহ মিয়ানমারের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।  এবার রাখাইনে যাচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দল। ফেব্রুয়ারিতে এই সফরের প্রস্তাব করা হলেও মিয়ানমার দাবি করেছিলো ‘এখন উপযুক্ত’ সময় না। পরে চলতি মাসের শুরুতেই ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলকে প্রবেশের অনুমতি দেয় তারা।

এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ৩০ এপ্রিল মংডু পৌঁছাবেন এবং তার পরেরদিনই রাখাইনে যাবেন। তবে সফর সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরাতে চলতি বছর জানুয়ারিতে প্রত্যাবাসন চুক্তি করে মিয়ানমারও বাংলাদেশ।মিয়ানমারের দাবি, তারা ৩০ হাজার প্রত্যাবাসনকারীর জন্য একটি ট্রানজিট ক্যাম্প তৈরি করবে। নিজ বাড়ি বা আশেপাশে পুনর্বাসিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের সেখানেই অবস্থান করবে।এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য মিয়ানমারের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পকে ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্প’ বলে আখ্যা দিয়েছে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি(আরসা)।

এক বিবৃতিতে তারা দাবি করে, ‘বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা কখনোই তাদের পৈতিৃক ভূমি ও গ্রামে ফিরে যেতে পারবে না। বরং তাদের নিজেদের বাকি জীবনের সঙ্গে এসব কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে জন্ম নেওয়া পরবর্তী প্রজন্মকেও ওই ক্যাম্পেই পার করতে হবে।’

প্রকাশ :এপ্রিল ২৬, ২০১৮ ১২:১৮ অপরাহ্ণ