২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:৫১

রোহিঙ্গা সমস্যা নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তীব্র প্রভাব ফেলবে: জাতিসংঘে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক:

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, এর সমাধান না হলে আমাদের অঞ্চল ও এর বাইরে এই রোহিঙ্গা সমস্যা শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তীব্র প্রভাব ফেলবে।

জাতিসংঘে মঙ্গলবার ‘শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসেবে এ বক্তব্য দেন।

সভায় রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রদত্ত ভাষণের পাঁচ দফা সুপারিশের কথা এবং কফি আনান কমিশনের রিপোর্টের শর্তহীন পূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্থায়ী শান্তি বিনির্মাণে আমাদের সরকার দারিদ্র্য বিমোচন, মানব উন্নয়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। যুদ্ধ ও সহিংসতার পরিবর্তে মানুষের মনে শান্তির সংস্কৃতি প্রোথিত করতে আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ অনুসৃত ‘কালচার অব পিস’ পদক্ষেপের পাশাপাশি আমরা টেকসই শান্তি এজেন্ডাকেও এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সন্ত্রাস দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী কোনো দেশের বিরুদ্ধে যাতে কেউ আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মৌলবাদ ও সহিংস চরমপন্থা দমনে আমরা সবসময়ই স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নিবিড় অংশগ্রহণকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছি।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ বিশ্বস্ত অংশীদার বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেসামরিক জনগণের সুরক্ষা প্রদানসহ সমস্যা সংকুল জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গত তিন দশক ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমরা আমাদের সামর্থ্য ও পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে যাচ্ছি। সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ সবসময়ই উচ্চকণ্ঠ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিবিড় ও গতিশীল রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অত্যাবশ্যক বলে অভিমত দেন। উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা খাতের অর্থবরাদ্দ না কমিয়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের জন্য বর্ধিত এবং সুনিশ্চিত অর্থায়ন নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেন তিনি।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিরোস্লাভ লাইচ্যাকের ডাকে উচ্চপর্যায়ের এই সভায় বেলজিয়ামের রাজা; কলম্বিয়া, আয়ারল্যান্ড, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট; এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী; জর্জিয়া ও ক্রোশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী, ৪০টিরও বেশি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, অন্যান্য দেশের মন্ত্রী, উপমন্ত্রীসহ ১৩১ দেশ ও সংস্থার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ স্টেট বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড আহমাদ, নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়ে এরিখসেন সরিডি, এস্তোনিয়ার ডেপুটি ফরেন মিনিস্টার ভায়নো রেইনআর্ট, সশস্ত্র সংঘাতের সময় যৌন সহিংসতা প্রতিরোধবিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি প্রমীলা প্যাটেনের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও রোহিঙ্গা সংকট ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

অন্যদের মধ্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ

প্রকাশ :এপ্রিল ২৫, ২০১৮ ৫:১৯ অপরাহ্ণ