নিজস্ব প্রতিবেদক:
গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি ও বিরোধী দল নির্যাতনের অংশ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ডের কথা জানিয়ে জাতিসঙ্ঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কমনওয়েলথের পর মুসলিম দেশগুলোর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ওআইসিকেও চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
গত সোমবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এ চিঠি বাংলাদেশে ওআইসির সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মিশন ও দূতাবাসে পাঠানোর পাশাপাশি সংগঠটির সদর দফতরেও প্রেরণ করা হয়। ওআইসি মহাসচিবকে চিঠিটি দেয়া হয়েছে দলের কূটনৈতিক চ্যানেলে। চিঠি দেয়ার ব্যাপারে অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা কিছুই বলেননি।
জানা গেছে, জাতিসঙ্ঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কমনওয়েলথকে গত মাসে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে দেয়া চিঠির ধারাবাহিকতায়ই ওআইসিকে এই চিঠি দেয়া হয়েছে।
সূত্র মতে, চিঠিতে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবন্দিত্ব ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা-মোকদ্দমা, মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধাসহ সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র অনুপস্থিত দাবি করে ওই চিঠিতে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে ওআইসিকে অনুরোধ করা হয়েছে। চিঠিতে চলমান সঙ্কট নিরসনে সরকারকে প্রধান বিরোধী দল ও অন্যান্য দলের সাথে সংলাপে বসার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরা হয়।
চিঠিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে নির্বাচনের আগে বর্তমান বিতর্কিত সংসদ ভেঙে দেয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা এবং তাদেরকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পরামর্শ দেয়ারও অনুরোধ করেছে বিএনপি।
বিরোধী দল দমনের অংশ হিসেবে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা একটি মামলায় কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে ওই চিঠিতে তার মুক্তিতে সরকারই বিলম্ব ঘটাচ্ছে বলে জানানো হয়।
বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের পর বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে। একইসাথে নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটির কূটনৈতিক তৎপরতাও অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাবশালী দেশগুলোকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে নিয়মিত।
বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের এক নেতা বলেছেন, বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ এবং ওআইসির সদস্য। সরকার যখন বিরোধী দলের কোনো কথায় কান দেয় না, স্বৈরতান্ত্রিক পথে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়, তখন একটি বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে এসব বিষয়ে তাদেরকে জানানো খুবই প্রাসঙ্গিক।
ওই নেতা বলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত কূটনীতিকরা চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে চমৎকারভাবে ওয়াকিবহাল। তারা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রেখে যতটুকু ভূমিকা রাখা যায়, তা রেখে চলেছেন।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ