স্পোর্টস ডেস্ক:
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের সুযোগ ছিল প্রতিশোধ নেওয়ার। এবারের আইপিএলে প্রথম দেখায় যে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে হেরেছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয় দেখায় প্রতিশোধ দূরে থাক, উল্টো বিব্রতকর এক হার সঙ্গী করল রোহিত শর্মার দল। মাত্র ১১৮ রানের সম্বল নিয়েও মুম্বাইকে ৩১ রানে হারিয়েছে হায়দরাবাদ।
কাগজে-কলমে এটি হায়দরাবাদ ও মুম্বাইয়ের খেলা। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এটা শুধুই সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানের ম্যাচ। যে লড়াইয়ে দুবারই সাকিবের কাছে হারলেন মুস্তাফিজ। হায়দরাবাদের বিপক্ষে প্রথম দেখায় দারুণ বোলিং করেছিলেন মুস্তাফিজ। ৪ ওভারে ২৪ রানে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। কাল দ্বিতীয় দেখায়ও মন্দ করেননি। ৩.৪ ওভারে ১৮ রানে নিয়েছেন ইউসুফ পাঠানের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটা। আর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ব্যাট হাতে ৩ বলে করেছেন ১ রান।
ব্যাটিংয়ে সাকিবের সঙ্গী ছিল দুর্ভাগ্য। কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হওয়ার আগে ৪ বলে করেছেন ২ রান। পরে বল হাতে ৩ ওভারে ১৬ রানে নিয়েছেন একটি উইকেট। বাঁহাতি স্পিনার রোহিত শর্মার সে উইকেটটা নিয়ে ৩০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। সেই সঙ্গে মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৪ হাজার রান ও ৩০০ উইকেটের ডাবল অর্জন করেছেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার।
ঘরের মাঠে কাল হায়দরাবাদের বোলারদের কোনো জবাবই দিতে পারেননি মুম্বাইয়ের ব্যাটসম্যানরা। মন্থর উইকেটে রান তাড়া যে সহজ হবে না, সেটা জানাই ছিল। কিন্তু মুম্বাই সেটা এতটা কঠিন করে ফেলবে, সেটা কে জানত! এই মৌসুমে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা সন্দ্বীপ শর্মা ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই দারুণ এক ইন-সুইঙ্গারে ফেরান এভিন লুইসকে। এরপর দ্রতই ইশান কিশান তিন ম্যাচে দ্বিতীয়বার ডাক মেরে ফেরেন মোহাম্মদ নবীর বলে।
পাওয়ার-প্লের শেষ ওভারে প্রথমবার আক্রমণে আসেন সাকিব। দ্বিতীয় বলেই রোহিত শর্মাকে ফেরান স্লিপে শিখর ধাওয়ানের ক্যাচ বানিয়ে। পাওয়ার-প্লেতে মুম্বাইয়ের স্কোর ৩ উইকেটে ২২, এবারের আইপিএলে কোনো দলের সর্বনিম্ন। ব্যাটিং লাইনআপ সমৃদ্ধ হওয়ায় তবুও ম্যাচের ফেবারিট ছিল মুম্বাই। সূর্যকুমার যাদব ও ক্রুনাল পান্ডিয়ার ৪০ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি ওয়াংখেড়ের গ্যালারি-ভর্তি মুম্বাই সমর্থকদের আশাও দেখাচ্ছিল।
এরপরই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন রশিদ খান। আফগান স্পিনার ফিরিয়ে দেন ক্রুনালকে (২৪)। রিভিউ নিয়ে উইকেটটা পেয়েছে হায়দরাবাদ। রশিদ পরের ওভারে এসে ফেরান কাইরন পোলার্ডকেও। পরে তার কোটা শেষ করেন মেডেন ওভারে! ১৫তম ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসেছিলেন বাসিল থাম্পি। পঞ্চম বলেই তিনি ফিরিয়ে দেন দীর্ঘক্ষণ উইকেটে থাকা সূর্যকুমারকে (৩৮ বলে ৩৪)। সিদ্ধার্থ কউলের পেসে একই ওভারে ফেরেন মিচেল ম্যাকক্লেনাগান ও মায়াঙ্ক মারকান্দে। পরের ওভারে এসে কউল ফেরান মুম্বাইয়ের শেষ ভরসা হার্দিক পান্ডিয়াকেও। পান্ডিয়া যখন ১৯ বলে ৩ রান করে ফিরলেন, মুম্বাইয়ের স্কোর ৯ উইকেটে ৮১। ১৯তম ওভারে মুস্তাফিজকে ফিরিয়ে ৮৭ রানেই মুম্বাইকে থামিয়ে দেন থাম্পি। আইপিএলে এটিই মুম্বাইয়ের সর্বনিম্ন রান।
এর আগে হায়দরাবাদের ব্যাটসম্যানেরও রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে। ৬৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তারাও একশর আগে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল। ইউসুফ পাঠানের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত একশ পার করে তারা। ৮ বল বাকি থাকতে অলআউট হওয়ার আগে করে ১১৮ রান। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়া ইউসুফের ৩৩ বলে ২৯ রান যে এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, তখনো কে জানত! তার সমান ২৯ রান করেন উইলিয়ামসনও।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি