নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে ‘ওস্তাদী না করতে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরামর্শ দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
‘তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে’-প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, ‘তারেক রহমানের বাবার দেশ এটা। তার বাবা জিয়াউর রহমান এই দেশটাকে স্বাধীন করেছেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। আর এই দেশে তারেক রহমান আসবে, এখানে আপনার (শেখ হাসিনা) ওস্তাদী করার কোনও দরকার নেই। এটা আপনার বড় একটা কাজ না। তারেক রহমান এই দেশে অবশ্যই আসবে এবং যেদিন আসবে সবাই যেটা আশঙ্কা করে তারেক আসার আগেই আপনি এই দেশ থেকে চলে যাবেন। অর্থাৎ তারেক রহমান আসলে তিনি (হাসিনা) থাকবেন না।’
রবিবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকাস্থ ফেনী জেলা জাতীয়তাবাদী পরিষদ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশটির আয়োজন করা হয়।
আওয়ামী লীগের স্বার্থেই বিএনপির সাথে আলেচনা করতে হবে মন্তব্য করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের খুব দরকার নেই আপনাদের (আ.লীগের) সাথে আলোচনা করার। আলোচনাটা মনে হয় আপনাদেরই করতে হবে। কারণ দেশে গণতন্ত্র যখন ফিরে আসবে তখন আপনারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকবেন না। আর গণতন্ত্র থাকলে আপনাদের তো ক্ষমতায় আসারই কোনও সম্ভবনা নেই। সুতরাং যে ক’দিন দেশে গণতন্ত্র নেই সেটুকু সময় আপনারা ক্ষমতায় থাকেন।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘আজকে আপনারা যা করছেন আগামী দিনের সরকার যদি আপনাদের সাথে এ ধরনের আচরণ করে তখন আপনাদের কেমন দশা হবে? টাকা পয়সা যেভাবে লুটপাট করেছেন সেটা নিয়ে চিন্তা করেন। জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে। সুতরাং আপনাদের ভবিষ্যত রাজনীতির নিরাপত্তা এবং এই দেশে ভালভাবে থাকার জন্য আপনাদেরই বিএনপির সাথে আলোচনা করা দরকার হবে। অবশ্য এটাও ঠিক, আওয়ামী লীগ যা পারে এবং করে আমরা কিন্তু পারলেও সেটা করি না।’
‘বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত হস্তক্ষেপ করবে না’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্য উল্লেখ করে সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর বলেন, ‘ভারত নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবেন না! যদি হস্তক্ষেপ না করে তাহলে তো আপনাদের আয়ুষ্কালও বেশি দিন নেই। এই কথাটিও আপনাদের ভাবতে হবে। কারণ, অতীতের মতো ভারত যদি আগামী নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করে, এবং বাংলাদেশকে সত্যিকারে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায় তাহলে অবশ্যই আগামী নির্বাচনে আপনারা ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। জনগণ সেটি হতে দেবে না।’
দলীয় নেতাকর্মীদের রাজপথে নামার প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা যদি জেল ভয় না পাই, আমরা যদি জেলে যেতে চাই, তাহলে শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বাধ্য হবেন।’
তিনি বলেন, ‘জেলখানায় আর্থিকভাবে সামর্থ্যবানদের এসিও দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের নেত্রীকে যেভাবে রাখা হয়েছে সেটা মানসিকভাবে নির্যাতন ছাড়া আর কিছু নয়।’
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক নুরুল আমিন ভূইয়া বাদশার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও মিরপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দুলু প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা/এন আর