নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মানুষের মুক্তির জন্য গণ-অভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। সরকারের বিভিন্ন রোল মডেলকে মিথ্যাচার মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হবে। আর মুক্তি পাওয়ার একটি পথ, সেটা হচ্ছে, জনগণ।
তিনি বলেন, জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণকে জাগিয়ে তুলতে হবে। গণ-অভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। শুধু দেশনেত্রীর মুক্তির জন নয়, এটা বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য। অন্যথায়, এই ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশকে যে অবস্থায় নিয়ে গেছে, সেখান থেকে বের হওয়ার আসার জন্য অন্য কোন পথ আছে বলে, আমরা অন্তত মনে করি না।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি’ শীর্ষক এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব বলেন।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ও আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মানুষের কাছে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। মানুষের কাছে যেতে হবে। মানুষকে নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বেগম জিয়ার সাজার বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, বলতে আমাদের কোনো দ্বিধা নেই, নিম্ন আদালতের হাকিম সাহেব অপেক্ষা করতে থাকেন, উপর থেকে কি নির্দেশ আসবে। এরপর সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। উচ্চ আদালতে, কিছুটা ভরসা ছিল যে, তারা দেখেন রায়টা ঠিক হচ্ছে কি না। কিন্তু এখন সেটাও দেখে না!
সকল রাজনৈতিক দল ও যারা গণতন্ত্র চান তাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন, আমরা একটি ইস্যুতে একমত হই। সেটা হলো, আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে চাই। এই ইস্যুতে একটি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হওয়া প্রয়োজন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে পারেন না। তিনি রাগ করে বলেছেন। উনি এটা করতে পারেন না। তার সেই এখতিয়ার নেই। এই ঘোষণাটা সংবিধানের বাইরে। আর ছাত্ররা চেয়েছিল কোটা পদ্ধতির সংস্কার।
কিন্তু তিনি সেটা না করে কোটা পদ্ধতি উঠিয়ে দিয়েছেন! জানেন যে, এটা কোর্টে উঠলে আটকে দেয়া হবে। যার ফলে এখন পর্যন্ত গেজেট হয়নি। এখন পর্যন্ত অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
বিচ্ছিন্ন আন্দোলন করে বা ছাত্রদের কিংবা একটি শ্রেণীর আন্দোলন করে কোনো লাভ হবে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যদি সিস্টেমের আন্দোলন না করা হয়, যদি গণতন্ত্রের আন্দোলন না করা হয়, যদি না অধিকারের জন্য আন্দোলন করা হয়।
কারণ জনগণের প্রতিনিধিত্ব থাকলেই তো সেই সরকার জনগণের কথা চিন্তা করবে। এই কারণে আমরা বলেছি, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার চাই। আর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে। সেই নির্বাচন অবশ্যই তত্ত্বাবধায়ক ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। এর বাইয়ে হলে সেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না।
৫ জানুয়ারি নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যে নীল-নকশায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করা হয়েছিল, সেই অবস্থায় এখনো পরিবর্তন হয়নি। আরো ভয়াবহ অবস্থা রয়েছে।
দেশ এক মহা-সংকটে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত ২০০৮ সালের পরে যারা ক্ষমতায় আসলো এবং আসার পরে যখন তারা সব কিছু তাদের মত করে সাজিয়ে নিতে শুরু করলো, বিশেষ করে সংবিধানকে তাদের মত করে পরিবর্তন করলেন। ঠিক তখন থেকে রাজনীতির ভবিষ্যৎ মোড় পরিবর্তন হওয়া শুরু হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ