নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিদ্যুৎ ব্যবহারে জনগণকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে সবাইকে তিনি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় নিজ হাতে বিদ্যুতের সুইচ অফ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতে বা আপনারা যারা সরকারি কর্মচারী আছেন, তারা নিজ হাতে সুইচটা অফ করলে আপনাদের কোনো ক্ষতি হবে না; বরং দেশের সম্পদটা আপনি রক্ষা করতে পারলেন।
নিজে প্রধানমন্ত্রী হয়েও ঘর-বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় নিজ হাতে বিদ্যুতের সুইচ অফ করেন বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমি নিজ হাতেই কিন্তু বিদ্যুতের সুইচগুলো অফ করি, তাতে আমার কোনো সম্মান যায় না। নিজের কাজ নিজে করতে কোনো লজ্জা নেই। কিন্তু এতে সুবিধা যেটা পাবেন বিদ্যুৎ ব্যবহারে যদি সাশ্রয়ী হন, তা হলে বিদ্যুৎ বিলটা কম আসবে।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভেড়ামারা ৪১০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ১৫ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।
উপজেলাগুলো হচ্ছে- ধামরাই, নিকলী, রাউজান, পীরগঞ্জ, খোকসা, দেবহাটা, রূপসা, ফুলতলা, দীঘলিয়া, বিয়ানীবাজার, দক্ষিণ সুরমা, বাঘাতিপাড়া, বেড়া, হবিগঞ্জ সদর এবং চুয়াডাঙ্গা সদর।
প্রধানমন্ত্রী পরে বিদ্যুতায়িত ১২টি স্থানের জনগণের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন।
এ ছাড়া শেখ হাসিনা অনুষ্ঠান থেকে উদ্ভাবনীমূলক অনলাইন ট্রেনিং প্লাটফর্ম ‘কুশলী’র উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই দেশের মানুষ এই বিদ্যুৎ যথাযথভাবে ব্যবহার করবেন। বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে কিন্তু অনেক টাকা খরচ হয় এবং যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়, সেই টাকা কিন্তু বিদ্যুতের দাম আমরা গ্রহণ করি না- এখানে আমরা ভর্তুকি দিই। সেক্ষেত্রে আমি প্রত্যেককেই বলব, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী জনগণের উদ্দেশে বলেন, কীভাবে স্বল্প বিদ্যুৎ খরচ করে আপনারা আপনাদের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে পারেন, সেদিকে আপনাদের যত্নবান হতে হবে। এমন না যে, সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল- এটি করলে কিন্তু চলবে না। প্রত্যেককেই এ ব্যাপারে যথাযথভাবে আন্তরিক থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা এসব ইলেকট্রনিক ডিভাইস চার্জ শেষে চার্জারটি বিদ্যুতের সংযোগ থেকে খুলে রাখলেও অনেকটা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যায় বলে উল্লেখ করেন।
তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্পর্কে শিক্ষাদানেও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিদ্যুতের পাশাপাশি পানি ব্যবহারেও সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে অপচয় রোধ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উদ্যোগ তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক, জাপান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স, জাতীয় সংসদের সদস্যবৃন্দ এবং পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক দেশজনতা/ এন আর