নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগের দিন আন্দোলন এক মাস স্থগিত করলেও সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। তারা এখন এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দাবি করছে।
সোমবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে কোটার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আন্দোলন ৭ মে অবধি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিল আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
এই বৈঠকের পর ওবায়দুল কাদের জানান, এক মাসের মধ্যে কোটার বিষয়টা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
কিন্তু এ নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। আন্দোলন স্থগিতকারী নেতাদেরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পাল্টা কমিটির ঘোষণা দেয় বামপন্থী কিছু ছাত্র নেতারা। আর মঙ্গলবার ছাত্রদের একাংশ ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচি পালন করে।
এর মধ্যে সোমবার জাতীয় সংসদে মুক্তিযোদ্ধা কোটা কমানোর দাবির তীব্র সমালোচনা করেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেছিলেন ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা সুযোগ পাবে না, রাজাকারের বাচ্চারা সুযোগ পাবে? তাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংকুচিত হবে?’
এই বক্তব্যকে আন্দোলনকারীরা ধরে নেন, তাদেরকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলা হয়েছে। আর এই মন্তব্য বিকাল পাঁচটার মধ্যেই প্রত্যাহারের দাবিতে সকালেই আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু মতিয়া এ বিষয়ে কিছু বলেননি।
আবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, কোটায় পর্যাপ্ত যোগ্য শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না বলে কোটা সংস্কারে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে আগামী বাজেটের আগে কোটা কমানো সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।আর আন্দোলনকারীরা এটা মানতে নারাজ। তারা বাজেট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি নন।
সন্ধ্যা ছয়টার কিছু আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করা হয় ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের’ পক্ষ থেকে।
পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কোটা সংস্কারের বিষয়ে সুস্পস্ট নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত আমরা রাস্তায় থাকব, আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
ছাত্রদের মধ্যে কোনো বিভেদ নাই, জানিয়ে রাশেদ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনো গ্রুপ নাই, আমরা সবাই এক, কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া কেউ কিছু বলবেন না।’
এই সংবাদ সম্মেলনের পর মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে সব মিলিয়ে ৫৬ শতাংশ কোটা আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোটা আছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য, ৩০ শতাংশ। এর বাইরে জেলা ও নারী কোটা আছে ১০ শতাংশ করে, পাঁচ শতাংশ কোটা আছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আর এক শতাংশ আছে প্রতিবন্ধীদের জন্য।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর