নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাতভর তাণ্ডবের প্রতিটি মুহূর্ত মৃত্যু ভয়ে কেটেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির স্ত্রী সালমা জামান। তিনি বলেন, ‘হামলার সময় মেয়েকে নিয়ে বাসার মধ্যেই লুকিয়ে ছিলাম। মেয়ে ভয়ে কাঁদছিল। তখন মেয়ের হাত শক্ত করে ধরেছিলাম। তাণ্ডবের প্রতিটি মুহূর্তে বারবার মৃত্যু ভয়ে আঁতকে উঠেছি।’
গতকাল রবিবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া ‘সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে’ আন্দোলনের এক পর্যায়ে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাসভবনে হামলা চালায় আন্দোলনকারীর। এসময় ভিসির বাসার ফ্রিজ, আলমারি থেকে শুরু করে সব ধরনের আসবাবপত্র ভেঙে ফেলা হয়। ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডবের সময় বাসার মধ্যেই লুকিয়ে ছিলেন ভিসির পরিবারের সদস্যরা। হামলার সময় বাসায় ছিলেন ভিসিসহ তার স্ত্রী সালমা জামান, ছেলে আশিক খান, মেয়ে আফিয়া খান।
ঘটনার প্রসঙ্গে ভিসির স্ত্রী সালমা জামান বলেন, ‘রাত একটায় বাসায় হামলা হয়, সেসময় বাসভবনের প্রধান ফটক ভেঙে কয়েকশ’ ছেলে ও মেয়ে আন্দোলনকারী ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে। তখন পুলিশ ডাকতে বললেও ভিসি পুলিশ ডাকতে চাননি। তখন তিনি (ভিসির) বারবার বলেছেন- পুলিশ ডাকলে ওরা ছাত্রদের ওপর হামলা করবে। ছাত্রদের মেরে ফেলবে। তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আমাদের ওপর হামলা হবে না। আমি ওদের বোঝাচ্ছি।’
সালমা জামান আরও বলেন, ‘তারা (আন্দোলনকারীরা) ভাঙচুর করতে শুরু করলে তিনি (ভিসি) তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা। স্যার (ভিসির) ছেলেকে নিয়ে নিচে নেমে যান, আমি মেয়েকে নিয়ে লুকিয়ে থাকি। এসময় তারা বাসার সবকিছু ভেঙে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তখন চোখে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না।’
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকেই আন্দোলন চলছিল। সন্ধ্যায় একবার বাসার সামনে বসছিল আন্দোলনকারীরা। পরে তারা চলে গেছে। এরপর বাসার কেউ ঘুমায় নাই। কারণ উত্তেজনা চলছিল। স্যারের (ভিসির) ফোনে বারবার ফোন আসছিল। তিনি বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। রাত ৯টার দিকে বাসা ছেড়ে রাতের জন্য অন্য কোথাও গিয়ে থাকতে চাইলেও স্যার বাসা ছেড়ে যেতে চাননি।’
সরেজমিনে দেখা যায়, ভিসির বাসার আসবাবপত্র থেকে শুরু করে ব্যবহার্য এমন কোনও জিনিসপত্র নাই যা ভাঙেনি। টিভি-ফ্রিজ সব ভাঙা। বিভিন্ন জিনিসপত্র এখানে-ওখানে ছড়িয়ে আছে।