আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সাবেক দ্বৈত চর সের্গেই স্ক্রিপালকে হত্যাচেষ্টার ‘ভূয়া গল্প সাজিয়ে’ যুক্তরাজ্য ‘আগুন নিয়ে খেলছে’ বলে হুঁশিয়ার করেছে মস্কো।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এ মন্তব্য করেন রুশ রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া। আজ শুক্রবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
তিনি বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে রাশিয়াকে ‘কলঙ্কিত’ করাই ব্রিটেনের উদ্দেশ্য।
পক্ষত্যাগী রুশ গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়াকে যুক্তরাজ্যের সলসবেরির উইল্টশায়ারে বিষাক্ত নার্ভ এজেন্ট দিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাশিয়াকে দায়ী করে আসছে ব্রিটেন। তবে মস্কো শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করছে। স্ক্রিপালকে হত্যাচেষ্টা নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত কারেন পিয়ার্স বলেছেন, যুক্তরাজ্য তার পদক্ষেপের জন্য যেকোনো পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত।
স্ক্রিপালকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাশিয়া যৌথ তদন্তের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিলে তা নাকচ করে যুক্তরাজ্য। এরপর নিউইয়র্কে গতকাল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠক ডাকে মস্কো।
রাশিয়া দাবি করে, স্ক্রিপালকে হত্যাচেষ্টা নিয়ে মস্কোর ‘বৈধ প্রশ্নগুলো’ লন্ডন এড়াতে পারে না। এ ঘটনায় ‘বলিষ্ঠ ও দায়বদ্ধ’ তদন্তের আহ্বান জানায় তারা।
নিরাপত্তা পরিষদে রুশ রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, মস্কোর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভয়ংকর ও অসমর্থিত। রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রচারণার যুদ্ধ চালাচ্ছে যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত কারেন পিয়ার্স বলেন, স্ক্রিপালকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাশিয়াকে সন্দেহ করার নানান কারণ রয়েছে। রাষ্ট্রীয় মদদে গুপ্তহত্যার রেকর্ড আছে দেশটির।
জাতিসংঘে মার্কিন প্রতিনিধি কেলি কারি বলেন, রাশিয়া তার রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে নিরাপত্তা পরিষদকে ব্যবহারের চেষ্টা করছে।
রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, যে রাসায়নিক ব্যবহার করে সের্গেই স্ক্রিপালকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিলো সেটি শুধু রাশিয়াতেই নয় আরও বহু দেশে প্রস্তুত হয়।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের উচিত ছিল আরও ভালো মানের গল্প তৈরি করা।
এদিকে ওই হামলার শিকার হয়েছিলেন সের্গেই স্ক্রিপালের মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপালও। তিনি ধীরে ধীরে সেরে উঠলেও তার বাবা এখনও হাসপাতালে রয়েছেন আশঙ্কাজনক অবস্থায়। তাদের দুজনকে নিরিবিলি শহর স্যালিসবারির একটি পার্কের বেঞ্চে অচেতন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিলো।
উল্লেখ্য, সের্গেই স্ক্রিপাল নিজের দেশের তথ্য পাচার করতেন যুক্তরাজ্যকে। তাকে হত্যা চেষ্টার পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে রাশিয়ার এক কূটনৈতিক লড়াই শুরু হয়েছে। এ ঘটনার জেরে যুক্তরাজ্য ও তার মিত্রদেশগুলো ১৩০ জনের বেশি রাশিয়ান কূটনীতিককে বহিষ্কার করে। জবাবে রাশিয়াও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সমানসংখ্যক কূটনীতিককে বহিষ্কার করে।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ