মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আগে অন্য কিছু নিয়ে আলোচনা হবে না। তিনি বলেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিই হচ্ছে আমাদের এক নাম্বার দাবি, এক নাম্বার শর্ত। সব কিছুর আগে তাঁকে মুক্ত করতে হবে। এরপর অন্য কিছু নিয়ে আলোচনা হবে।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইফনিটি(ডিআরইউ)তে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ২০–দলীয় শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্যদের(সরকারী দলের) নামে হাজার হাজার মামলা থাকা সত্তে¡ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কেবল বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় তাঁকে পাঁচ বছর সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। অথচ সরকারের এক ডজন মন্ত্রী আছেন, যাদের বিরুদ্ধে মামলা ছিল। তিনজন মন্ত্রী আছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা সর্বোচ্চ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। তারা ঠিকঠাক বহাল তবিয়তে মন্ত্রিত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিএনপি মহসচিব বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের(বিএনপি) দলের নয়জন নেতা ও সাবেক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। ইতিমধ্যে ব্যাংকগুলোর কাছে তাঁদের অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে কয়েকজন আছেন যাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টই নেই। এ কথা বাংলাদেশের কে বিশ্বাস করবে, হাবিব উন নবী খান সোহেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, দুদক দুর্নীতি দমন করবে কিভাবে, এর কর্মকর্তারাইতো দুর্নীতি করে করে এখন সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এ দেশের সব মানুষ জানে, কিন্তু মুখ খুলতে পারে না। মুখ খুললে কী হয়, বুলডোজার দিয়ে তাদের বাড়ি ভেঙে দেয়া হয়। মুখ খুললে শফিক রেহমানের মতো একজন স্বনামধন্য সাংবাদিক, বাংলাদেশে সমাদৃত ব্যক্তি তাঁকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। তাঁর অপরাধ তিনি সরকারের বড় বড় হুজুরদের(সরকারের নেতা-মন্ত্রীদের) দুর্নীতি খোঁজার জন্য কাজ শুরু করেছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিরোধী দলের বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার জন্য। দুদকের দুর্নীতি খোঁজার সময় নেই বলেও মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা।
গত ১০ বছরে সরকারের লোকজন হিমালয় সমান সম্পদ করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের থানার নেতাদেরও এখন যে সম্পদ, এর আশপাশেও আমাদের কেউ যেতে পারবে বলে আমার মনে হয় না। সেগুলো দেখার জন্য দুদকের হাতে সময় নেই। তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট। কোনো হিসাব নেই, জবাবদিহিতা নেই। পার্লামেন্টে আইনও পাস করে নিয়েছে যে ওখানে এগুলো প্রশ্নও করা যাবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বানানো হয়েছে। এটাও কাছের মানুষদের দিয়ে দেয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো নিজেদের লোকদের দিয়ে দেয়া হয়েছে। বড় বড় কন্ট্রাক্ট সব তাঁদের কাছে। পদ্মা সেতু আট হাজার কোটি থেকে ত্রিশ হাজার কোটি ছাড়িয়ে গেছে। সেতু ও সড়ক নিয়ে খুব বড় কথা বলা হয়। কিন্তু একটি রাস্তা দিয়েও যাওয়া যায় না। কয়েক দিন আগে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকায় আসতে ২০ ঘণ্টা সময় লেগেছ বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
দৈনিক দেশজনতা/ এন এইচ/ টি এইচ