২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:২৬

ফেসবুকের ৮ কোটি ৭০ লাখ মানুষের তথ্যফাঁস

বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক :

ফেসবুক বলেছে তাদের ধারণা অনুযায়ী ৮কোটি ৭০ লাখ মানুষের তথ্য লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার সাথে হয়েছিল। বিবিসিকে জানানো হয়েছে এদের মধ্যে প্রায় ১১ লাখ অ্যাকাউন্ট যুক্তরাজ্য ভিত্তিক। এই কেলেঙ্কারি ফাঁস করে দেয়া ক্রিস্টোফার ওয়াইলির বরাত দিয়ে এর আগে বলা হয়েছিল প্রায় ৫ কোটি মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফেসবুকের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মাইক স্ক্রফারের ব্লগে প্রকাশ করার পর নতুন এই তথ্য উঠে আসে।
‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’ নামের একটি কুইজ অ্যাপের মাধ্যমে এই তথ্য ফাঁস সম্ভব হয়েছে। ফেসবুক ধারণা করছে ৩ লাখেরও বেশী মানুষ এই অ্যাপটি ব্যবহার করেছেন। আগে বরা হয়েছিল এই সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজার। অ্যাপ ব্যবহারকারীদের প্রায় ৯৭% যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী। মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে ১ কোটি ৬০ লাখ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের। যুক্তরাজ্যের তথ্য কমিশনের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানান কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে তারা এই বিষয়ের তথ্য-প্রমাণাদি নিয়ে আরো যাচাই করবে।
এই কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক। কর্তৃপক্ষ জানতো যে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা লক্ষাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু লন্ডন ভিত্তিক সংস্থাটি সেসময় দাবী করে যে তারা সেসব তথ্য মুছে দিয়েছে। এই বক্তব্যের উপর বিশ্বাস করে ফেসবুক।
চ্যানেল ফোর নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী ফাঁস হয়ে যাওয়া কিছু তথ্য এখনো পাওয়া যাচ্ছে। যদিও ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা বলছে তারা তাদের কাছে থাকা তথ্য নষ্ট করে দিয়েছে। ১১ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ‘হাউজ অব কমন্স’এ এই বিষয়ে নিজের যুক্তি তুলে ধরবেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। গ্রাহকের অজ্ঞাতে বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের তথ্য ব্যাবহার করার এই খবর রটে গেলে, ফেসবুক প্রধান মার্ক জাকারবার্গকে ব্রিটিশ সংসদে তলব করা হয়। এ বিষয়ে তাদের ভুল হয়েছিল স্বীকার করেন মি. জাকরাবার্গ এবং গ্রাহকদের তথ্য তৃতীয় পক্ষের হাতে চলে যাবার এই ঘটনাটিকে ‘গ্রাহকদের সাথে বিশ্বাসভঙ্গ’ করার সামিল বলে ফেসবুকে দেয়া বিৃবতিতে মন্তব্য করেন ।
বিভিন্ন এ্যাপ ভবিষ্যতে যাতে ফেসবুককে ব্যাবহার করে গ্রাহকদের তথ্য সহজে হাতিয়ে নিতে না পারে সেজন্য সামনের দিনগুলোতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন মার্ক জাকারবার্গ। ফেসবুকের শীর্ষ প্রযুক্তি কর্মকর্তা মি. স্ক্রফার ফেসবুকের নিতে যাওয়া পদক্ষেপগুলো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন।
ফোন নম্বর বা ইমেইল অ্যাড্রেস দিয়ে খোজ করে কোনো ব্যক্তিকে যেন খুঁজে না পাওয়া যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ। ফেসবুক বলছে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে এর আগে অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। কোনো অ্যাপের মাধ্যমে কোনো ইভেন্ট পেইজের অতিথিদের তালিকা বা ঐ পেইজের মেসেজ দেখা যাবে না। মেসেঞ্জারের অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ও ফেসবুক লাইট ব্যবহার করে করা ফোন কল ও মেসেজ হিস্টরি একবছরের বেশী সেইভ করা থাকবে না এমন প্রতিশ্রুতি। কোন সময় ফোন কল করা হয়েছে সেই তথ্যও সেইভ করা থাকবে না।
ব্যবহারকারীদের নিউজ ফিডে আগামী সপ্তাহ থেকে একটি লিঙ্ক দেখা যাবে । তারা কি কি অ্যাপ ব্যবহার করে সেগুলো পর্যালোচনা করে কি তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে সেবিষয়ে ব্যবহারকারীদের জানানো হবে।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :এপ্রিল ৫, ২০১৮ ১০:০০ পূর্বাহ্ণ