মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি রেকর্ড হয়েছে বলে যে ঘোষণা করা হয়েছে তা কেবল সরকারের ‘চাপাবাজি’।
রিজভী বলেন, ‘বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের সীমাহীন লুটপাট আর দুর্নীতিতে আর্থিক খাত ধ্বংস হয়ে গেছে। রাজকোষ কেলেংকারিসহ সমস্ত ব্যাংক লুট করে ফোকলা করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কমতে কমতে এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে। রেমিটেন্সে ধস নেমেছে। দুঃশাসনের কবলে পড়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করছে। রফতানি আয় কমছে ব্যাপক হারে। উন্নয়নের নামে দেশজুড়ে হরিলুট চলছে।
বুধবার বেলা ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার জিয়াউর রহমান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, চেয়ারপারপসনের উপদেষ্টা কবীর মুরাদ, সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলামসহ অনেকে।
গত মঙ্গলবার বিবিএসের পক্ষ থেকে সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের ইতিবাচক ভূমিকার কারণে এবার প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৬৫ শতাংশ, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি।
পরিকল্পনামন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন খাতের প্রবৃদ্ধির হার তুলে ধরে জানিয়েছেন, এই প্রবৃদ্ধির কারণে মাথাপিছু আয়ও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৫২ ডলার।
রিজভী জানান, গেøাবাল কম্পেটিটিভ ইনডেক্স বলছে, ‘এশিয়ার মধ্যে নেপালের পরেই সবচেয়ে খারাপ রাস্তা বাংলাদেশে। অন্যান্য দেশের তুলনায় দ্বিগুণ/তিনগুণ অর্থ ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হলেও কয়েক বছরের মাথায় ভয়াবহ দুর্গতির কারণ হয়ে উঠছে সে রাস্তাগুলো। সেসব রাস্তাগুলো দ্রæত পুনঃর্নিমাণ করার প্রয়োজন পড়ে। অর্থাৎ আবারও নতুন বাজেট, নতুন লেনদেন, নতুন ভাগ-বাটোয়ারা, চুরির নতুন সুযোগ তৈরী করা হচ্ছে। তারপরও ‘জিডিপি প্রবৃদ্ধির রেকর্ড’ হয়েছে বলে চাপাবাজি করছে সরকার।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপর সরকার সর্বোচ্চ জুলুম করছে এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে সরকারের সকল অপকর্ম, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুরেূ প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের মুখ বন্ধ করতেই বেগম খালেদা জিয়ার জামিনসহ সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে তাকে তিলে তিলে কষ্ট দিচ্ছে সরকার।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৭৩ বছরের বয়স্ক একজন নেত্রীর প্রকৃত শারীরিক অবস্থা কেমন সেটিও আমরা জানতে পারছি না এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তাঁর কাছে যেতে দিচ্ছে না এই জালিম সরকার।
রিজভী বলেন, জামিন পাওয়া মানুষের অধিকার। বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন। সরকার প্রধানের নির্দেশে সে জামিন স্থগিত করা মানবধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশবাসী অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি চায়।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে যে টালবাহানা চলছে, তা জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্রোধ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, অবিলম্বে দেশনেত্রীর কারামুক্তি নিয়ে নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। নইলে কেউ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারী জানান তিনি।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ