নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় এসব গ্রামের কয়েকশ বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় গেছেন এসব গ্রামের বাসিন্দারা। তারপরেও আতঙ্ক কাটছে না তাদের।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক, পেকুয়ার রাজাখালী, মগনামা, উজানটিয়া, কুতুবদিয়াপাড়া, ফদনারডেইল, সমিতিপাড়া, মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি, ধলঘাটা ও কুতুবদিয়া উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের অন্তত ১৫ গ্রাম। এছাড়া অন্যান্য ইউনিয়নের আরও কয়েকটি গ্রামসহ উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার নিম্নাঞ্চলও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় আরও অনেক নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট দুর্যোগ লাঘবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, রাতের জোয়ারে জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ইতোমধ্যে ওইসব এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া কক্সবাজার শহরসহ জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
পাউবো কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে সোমবার সকাল থেকে বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে পড়ে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ-ছয় ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলে আঘাত হানছে। বিশেষ করে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে গতকাল কয়েকটি ইউনিয়নের ৩০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে আরও বেড়িবাঁধ বিলীন হলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যাও বাড়বে। জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় মোরা কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে ঝড়ো হাওয়ায় বহু গাছপালা ভেঙে গেলেও এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে কক্সবাজার অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড়টি উত্তরে চট্টগ্রামের দিকে অগ্রসর হবে।
দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

