আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রচলিত আছে ভারতের অধিকাংশ মানুষ নিরামিষভোজী। কিন্তু সেটি মোটেও ঠিক নয়। অতীতের বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে ভারতের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ নিরামিষভোজী।
সরকারের পরিচালিত তিনটি জরিপে দেখা যায়, মাত্র ২৩ থেকে ২৭ শতাংশ ভারতীয় নিরামিষভোজী। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক বালমুরলি নটরাজন এবং ভারত-ভিত্তিক অর্থনীতিবিদ সুরাজ জ্যাকব সরকারের এ পরিসংখ্যানকে সঠিক বলে মনে করেন না। তাদের ধারণা এ পরিসংখ্যানে নিরামিষভোজী মানুষের সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। এর পেছনে রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিষয় জড়িত আছে বলে তারা মনে করেন।
সে হিসেবে ধরে নেয়া যায়, ভারতে মাংস খাওয়া মানুষের প্রকৃত সংখ্যা কমিয়ে দেখানো হয় এবং নিরামিষভোজী মানুষের সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানো হয়।
সার্বিক বিষয় বিবেচনা নিয়ে গবেষকরা বলছেন, ভারতে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ নিরামিষভোজী। সাধারণভাবে যা ধারণা করা হয়, এ সংখ্যা তার চেয়ে অনেক কম।
ভারতের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ হিন্দু এবং তারাই সবচেয়ে বড় মাংসভোজী। এমনকি উচ্চবর্ণের হিন্দুদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ নিরামিষভোজী।
ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের মতে ভারতের যেসব শহরে সবচেয়ে বেশি নিরামিষভোজী রয়েছেন সেটি নিম্নরূপ:
ইন্দোর: ৪৯%, মিরাট: ৩৬%, দিল্লি: ৩০%, নাগপুর: ২২%, মুম্বাই: ১৮%, হায়দ্রাবাদ: ১১%, চেন্নাই: ৬%, কলকাতা: ৪%
কিন্তু গবেষক নটরাজন এবং জ্যাকব বলছেন, সাধারণভাবে যা ধারণা করা হয়, গরুর মাংসভোজী মানুষ সংখ্যা তার চেয়ে বেশি।
সরকারী পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে, কমপক্ষে ৭ শতাংশ ভারতীয় গরুর মাংস খায়। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশটিতে নিরামিষ খাওয়াকে উৎসাহিত করছেন। ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের কাছে গরু ধর্মীয়ভাবে একটি পবিত্র বিষয়। ভারতে অর্ধেকের বেশি প্রদেশে গরু জবাই নিষিদ্ধ। গো-রক্ষাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, লক্ষ লক্ষ ভারতীয় – দলিত, মুসলিম এবং খ্রিস্টান গরুর মাংস খায়। গবেষক ড: নটরাজন এবং ড: জ্যাকব বলেন, বাস্তবে প্রায় ১৫ শতাংশ ভারতীয় অর্থাৎ ১৮ কোটি মানুষ সেখানে গরুর মাংস খায়। সরকার যে পরিসংখ্যান তুলে ধরে এটি তার চেয়ে ৯৬ শতাংশ বেশি। পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, অধিকাংশ ভারতীয় মাংস খায়। সেটি হতে পারে মুরগী কিংবা খাসির মাংস।এটা অনেকেই নিয়মিত খায়, আবার অনেকে মাঝে মধ্যে খায়। তবে অধিকাংশ ভারতীয় নিরামিষভোজী নয়।
সূত্র: বিবিসি
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ