স্পোর্টস ডেস্ক:
পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রেখেও শিরোপা জয়ের জন্য সুপার লিগের শেষ রাউন্ড পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে আবাহনীকে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ২০১৭-১৮ মৌসুমের শিরোপা গতকালই ক্লাবটি নিশ্চিত করতে পারত যদি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব হেরে যেত। কিন্তু প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে শেখ জামালের জয়ে সুপার লিগের শেষ ম্যাচেও আবাহনীর সামনে জয়ের চ্যালেঞ্জ থাকছে।
গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির কার্যত ম্যাচ ছেড়ে দেওয়ার মতো আয়েশী পারফরম্যান্সের সুবাদে ১২৭ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে আবাহনী। শীর্ষে থাকা আবাহনীর পয়েন্ট ১৫ ম্যাচে ২২।
প্রথমে ব্যাট করে ৪৬.৩ ওভারে ২৪১ রানে অলআউট হয় আবাহনী। জবাবে ২৭.৩ ওভারে ১১৪ রানে গুটিয়ে যায় খেলাঘরের ইনিংস। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে মেহেদী হাসান মিরাজ ম্যাচ সেরা হন।
বোলিংয়ের শেষ দিকে লাগামহীন অবস্থাতেই স্পষ্ট ছিল ম্যাচে নেই খেলাঘর। এদিন দুজন নতুন খেলোয়াড়ের লিস্ট-এ ক্রিকেটে অভিষেক করিয়েছে তারা। ২৪২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে উইকেট বিলিয়ে ফিরেছেন দলের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান। ম্যাচ জেতার বিন্দুমাত্র চেষ্টাও তাদের ব্যাটিংয়ে ফুটে উঠেনি। মাহিদুল ২৭, আনজুম ২৪, মাসুম খান অপরাজিত ২৩, রবিউল ইসলাম রবি ২০ রান করেন। আবাহনীর পক্ষে ৩২ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি। তাতেই লিস্ট-এ ক্রিকেটে প্রিমিয়ার লিগের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। গত বছর আবু হায়দার রনির ৩৫ উইকেট টপকে মাশরাফির ঝুলিতে এখন ৩৮ উইকেট। আবাহনীর সন্দীপ রায়, নাসির, তাসকিন দুটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ওপেনিংয়ে ৬৪ রানের জুটি গড়ে আবাহনীকে ভালো শুরু এনে দেন বিজয় ও নাজমুল শান্ত। বিজয় ২৭ রান করে রানআউট হন। দলীয় ১০০ রানে আব্দুল হালিমের শিকার হয়ে ফিরেন ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করা নাজমুল শান্ত। তারপরই মড়ক লাগে আবাহনীর ব্যাটিং লাইনে। আব্দুল হালিমের বোলিং তোপে ১১৭ রানে পাঁচ উইকেট হারায় দলটি। মিঠুন (১৮), যশপাল সিং (৫), মোসাদ্দেক (৮) দ্রুত ফিরে যান। ষষ্ঠ উইকেটে নাসির-সানজামুল ৩৬ রানের জুটি গড়েন।
নাসির (১৫) ও মাশরাফিকে (০) ফেরান আনজুম এবং সানজামুল (২৩) সাদিকুরের বলে বোল্ড হলে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে আবাহনী। ১৫৬ রানে আট উইকেট হারানো দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেয় নবম উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদের ৪৯ রানের জুটি। অবশ্য এ সময় খেলাঘরও হাল ছেড়ে দিয়েছিল। এমনকি অনেক রান দিলেও দুই বোলার আনজুম-সাদিকুরকে দিয়ে টানা ১৮ ওভার বোলিং করিয়ে গেছে। ৫ ওভারে ১০ রান দিয়ে চার উইকেট নেওয়া আব্দুল হালিমকেও আর বোলিংয়ে আনেনি খেলাঘর।
তাসকিন ২৬ রান করে আউট হলেও মিরাজ হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ইরফানের শিকার হওয়ার আগে মিরাজ ৫০ রান (৫ চার, ৩ ছয়) করেন। খেলাঘরের আনজুম-সাদিকুর দুটি করে, ইরফান একটি উইকেট পান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী: ৪৬.৩ ওভারে ২৪১ (নাজমুল শান্ত ৫৪, মিরাজ ৫০, বিজয় ২৭, তাসকিন ২৬, সানজামুল ২৩, মিঠুন ১৮, নাসির ১৫; আব্দুল হালিম ৪/১০, সাদিকুর রহমান ২/৪৬, আনজুম আহমেদ ২/৫২, ইরফান ১/৩৩)
খেলাঘর: ২৭.৩ ওভারে ১১৪ (মাহিদুল ২৭, আনজুম ২৪, মাসুম খান ২৩*, রবিউল ইসলাম রবি ২০; মাশরাফি ৩/৩২, সন্দীপ রায় ২/৫, নাসির ২/৮, তাসকিন ২/২৫, মিরাজ ১/১০)
ফল: আবাহনী ১২৭ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা: মেহেদী হাসান মিরাজ (আবাহনী)
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ