আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী এবং সাবেক ফার্স্টলেডি উইনি মাদিকিজেলা-ম্যান্ডেলা সোমবার ৮১ বছর বয়সে মারা গেছেন। তিনি ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কালো প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার সাবেক স্ত্রী। বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের কারণে নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তিনিও কারাবন্দি হন এবং প্রায় তিন দশক ধরে তারা ছিলেন বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক।
যদিও পরে নানা আইনি ও রাজনৈতিক জটিলতায় তার সেই সুনাম অনেকটাই ক্ষুণ্ন হয়েছে। তিনি ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনীতির অন্যতম শীর্ষ ব্যক্তি। দেশটির বহু মানুষের কাছে তিনি ছিলেন জাতির মাতা।
১৯৩৬ সালে দেশটির তৎকালীন ট্রান্সকেই যা এখন ইস্টার্ন কেপে তার জন্ম হয়। উইনি একজন প্রশিক্ষিত সমাজসেবী ছিলেন এবং কাজ করতে গিয়েই ১৯৫০ সালে তার সঙ্গে নেলসন ম্যান্ডেলার পরিচয় হয়। নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তার বিয়ে ৩৮ বছর টিকে ছিল। যদিও নেলসন ম্যান্ডেলার দীর্ঘ কারাজীবনের কারণে তাদের দাম্পত্যের বড় সময়টিই তার পরস্পরের থেকে দূরে ছিলেন।
১৯৯৬ সালে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। নেলসন ম্যান্ডেলা যখন জেলে যান, উইনি বর্ণবাদবিরোধী লড়াই চালিয়ে যান। নেলসন ম্যান্ডেলার যেদিন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ হয়, সেদিন সমর্থকদের উদ্দেশ্যে উইনি বলেছিলেন- আমাদের কখনও আশা ছাড়া উচিত হবে না। আসলে আমি মনে করি, এ আন্দোলন চলতেই থাকবে। যদিও পরে তিনি নানারকম স্ক্যান্ডাল ও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তার অনেক বক্তব্য নিয়েই বিতর্ক আছে।
১৯৯১ সালে অপহরণের দায়ে তার সাজা হয় এবং ছয় বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। আপিলের পর যদিও সে দণ্ড কমিয়ে তাকে জরিমানা করা হয়। ২০০৩ সালে ব্যাংকঋণ সংক্রান্ত ঘটনায় প্রতারণার অভিযোগে তার সাজা হয়। কিন্তু এসবের পরও তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর ভাবা হয়। তিনি সবসময় গরিব কালো দক্ষিণ আফ্রিকানদের জন্য কথা বলেছেন। তিনি সবসময় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থেকেছেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এএনসির একজন সংসদ সদস্য ছিলেন।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি