আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চলতি মাসের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো আবারও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির স্থানীয় সময় প্রায় ৫টার সময় এ পরীক্ষা চালানো হয়। স্বল্পপাল্লার ওই স্কাড ক্ষেপণাস্ত্রটি ৪৫০ কিলোমিটার উড়ে গিয়ে জাপানি জলসীমায় পড়ে। এ ঘটনায় জাপান তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিবিসি।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জানান, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা জাতিসংঘের নিরাপত্তা চুক্তির চরম লঙ্ঘন এবং এ ধরনের কাজ থেকে দেশটিকে বিরত রাখতে তাদের মোকাবিলা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন। এক সংবাদ বিবৃতিতে জাপানের মন্ত্রিসভার মুখ্য সচিব ইয়াশিদা সুগা জানান, জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সাদো ও ওকি দ্বীপের মাঝামাঝি এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্রটি অবতরণ করেছে। এতে কোনো নৌযানের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও এ ঘটনাকে ‘চরম ধৃষ্টতা’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের পদক্ষেপ জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ক্ষতির কারণে হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কাও প্রকাশ তার।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক কমান্ড জানায়, উত্তর কোরিয়ার ওনসান থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয় এবং অবতরণের আগে প্রায় ছয় মিনিট এটি আকাশে ছিল। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি ১২০ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠেছিল।
উত্তর কোরিয়া ঠিক কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তার ‘সঠিক সংখ্যা বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে’ বলে জানিয়েছেন দক্ষিণের ওই কর্মকর্তা। তার এ কথায় একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়ে থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত রয়েছে। নতুন একটি বিমান প্রতিরক্ষা পদ্ধতি পরীক্ষার ঘোষণা দেয়ার একদিন পর এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করল উত্তর কোরিয়া। পর্যবেক্ষকরা জানান, এ পরীক্ষায় ইঙ্গিত মেলে ওয়ারহেড বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে উত্তর কোরিয়া ক্রমাগত অগ্রগতি অর্জন করছে। উত্তর কোরিয়ার সব ধরনের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন মোকাবিলায় আত্মরক্ষার্থে এসব কর্মসূচি অব্যাহত রাখা প্রয়োজন দাবি করে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে আসছে দেশটি। উত্তর কোরিয়ার কাছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি স্বল্পপাল্লার স্কাড ক্ষেপণাস্ত্রের বড় ধরনের মজুদ আছে। ওই স্কাড ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণগুলোর ক্ষমতা এক হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এর আগে উত্তর কোরিয়ার যে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ‘সফল’ পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছে সেগুলো মাঝারি ও দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। ২১ মে মাঝারি পাল্লার একটি এবং ১৪ মে দীর্ঘ পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দুটির পরীক্ষা চালিয়েছিল দেশটি। ধারণা করা হচ্ছে, দেশটির কাছে দুটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। গত বছর দেশটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখন্ডে আঘাত হানতে সক্ষম। উত্তর কোরিয়ার দাবি, মার্কিন আগ্রাসন রুখতে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা জরুরি। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে আভাস দেয়া হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম এমন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ