নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একের পর এক ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজয় একাত্তর হলে আবারও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দুই শিক্ষার্থী। গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন হলে মোট চারজন শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন। গত শুক্রবার যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাঁরা হলেন- ইলামের শিক্ষা ও ইতিহাস বিভাগের বেলায়েত হোসেন রকি (ইসলাম শিক্ষা) এবং ঊর্দু বিভাগের ফয়সাল উদ্দিন। তাঁরা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আহত অবস্থায় তাঁরা ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিয়েছেন।
রকি ও ফয়সালের কয়েকজন বন্ধু জানান, রকি হলের দ্বৈতাবাসিক ছাত্র। তাঁকে গত কয়েকদিন আগে পদ্মা ব্লকের ২০০৭ নম্বর কক্ষে হল প্রশাসন সিট দিয়েছে। তারপরে তিনি ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে নিয়মিত যেতেন না। চট্টগ্রামের কয়েকজন বন্ধুদের সঙ্গে রকি ও ফয়সালের ওঠাবসা। ছাত্রলীগ নেতারা এটাকে ‘কোরাম’ মনে করে তাদেরকে মেরেছেন। রকিকে হল প্রশাসনের বরাদ্দ দেওয়া রুমে উঠতে দিতে চায় না ছাত্রলীগের নেতারা।
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী বেলায়েত হোসেন রকি বলেন, ‘আমাকে হল শাখা ছাত্রলীগের পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক শামছের তাব্রীজ প্রান্ত ফোন দিয়ে ফকির রাসেল (ছাত্রলীগের হল শাখার সভাপতি) ভাইয়ের রুমে যেতে বলেন। সেখানে গিয়ে দেখি আমার বন্ধু ফয়সাল উদ্দিনকে মারধর করছেন তাঁরা। আমি রুমে ঢুকলে আমাকে বসতে বলেন। একজন আমার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলেন, ঘড়িটা তো দামি, খোল এটা। প্রথমে প্রান্ত এসে আমাকে কিল-ঘুষি দেন। পরে হল শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম তামীম, শামছের তাব্রীজ প্রান্ত, আরিফুল ইসলাম ও শেখ আরিফিন ইমরোজ স্ট্যাম্প ও রড দিয়ে মারধর করতে থাকেন।’
ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, “ফকির রাসেল ভাই আমার সামনে চেয়ারে বসা ছিলেন। মারার সময় তাঁরা বলছিলেন, ‘তুই কুমিল্লার পোলাপাইন নিয়ে কোরাম করিস।’ এ সময় ফকির রাসেল ভাইয়ের এক বন্ধু আমাকে ও ফয়সালকে আরও বেশি করে মারার নির্দেশ দিচ্ছিলেন। মারধরের পর আমার বন্ধুরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। এক্সরে করাই। ডাক্তার আমাকে সাতদিন বিশ্রামে থাকতে বলেছেন।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফকির রাসেল বলেন, ‘মারধরের ঘটনা শুনেছি। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। মারধরে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। ঘটনা জেনে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। হলের এই ঘটনার বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ কে এম শফিউল আলম ভূইয়াকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা ধরেননি।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সিন