নিজস্ব প্রতিবেদন
রাজশাহীতে ভয়াবহ কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে আম, লিচুসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ঝড়ে শত শত বাড়ি-ঘরসহ গাছপালা দুমড়ে-মুষড়ে গেছে। ঝড়ের কারণে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত জেলার নয়টি উপজেলার অধিকাংশ এলাকা এমনকি নগরীর কিছু অংশ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। দিনভর বিদ্যুৎ খেলেছে লুকোচুরি খেলা। আবার কোনো এলাকা বুধবার (৩ মে) সকালেও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি বলে জানা গেছে।
ঝড়ে সবচেয়ে বেশি কপাল পুড়েছে আমের রাজধানী খ্যাত রাজশাহীর আমচাষীদের। আমচাষিদের মতে বাগানের প্রায় তিন ভাগের দু’ভাগ আম ঝরে পড়ে গেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝরে পড়া এসব কাঁচা আম মাত্র এক টাকা কেজিতে আম বিক্রি হচ্ছে।
জেলার পবার বড়আমগাছী গ্রামের ইমান আলী ব্রেকিংনিউজকে জানান, তিনি গত কয়েক বছর ধরে আমের বাগান লিজ নিয়ে ব্যবসা করেন। এবারও তার অন্তত ১০টি বাগান রয়েছে। কয়েকদিন পর থেকেই বাগানগুলোতে দেশী জাতের আম পাড়া শুরু হবে। কিন্তু রবিবারের ঝড়ে প্রতিটি বাগানের অন্তত ৫০ ভাগের ওপরে আম পড়ে গেছে। যে আম আছে তাতে বিক্রি দাম সঠিক পাওয়া গেলেও এবার লোকসান গুনতে হবে তাকে।
জেলার বাঘা উপজেলার গড়গড়ি এলাকার আশরাফুল ইসলাম ও পুঠিয়া উপজেলার জামিরার আব্দুলও বলেন একই কথা। তারা ব্রেকিংনিউজকে জানান, বাগানে যে পরিমাণ আম ঝড়ে পড়ে গেছে-তাতে এবার লাভ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। আমচাষ করে এবার ক্ষতিরমুখেই পড়তে হবে। ঝড়ে পড়ে যাওয়া বিপুল পরিমাণ আমের কড়ালি সোমবার ও মঙ্গলবার রাজশাহীতে বিক্রি হয়েছে ১-২ টাকা কেজি দরে। তারপরেও অনেক এলাকায় ক্রেতার অভাবে আম বিক্রিই হয়নি বলে জানান আমচাষিরা।
সাধারণত স্থানীয় গরীব শ্রেণির মানুষরা ঝড়ের সময় বা পরে বাগান থেকে আমের কোড়ালিগুলো কুড়িয়ে নেন। এরপর তারা পরদিন থেকে বিক্রি করেন। ক্রেতার অভাবে আজও রাজশাহীর বাজারে ঝরে পড়া আমের কোড়ালি বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে জেলার মোহনপুর উপজেলার নুড়িয়াক্ষেত্র গ্রামের ধানচাষী মোবারক হোসেন ব্রেকিংনিউজকে বলেন, আলু তোলা জমিতে আঠাস ধানের শীষ আসলেও শতভাগ ক্ষেতেই ধান হয়নি। আর আগে রোপনকৃত জমির আর কয়েকদিন পরেই ধান কাটা শুরু হত। কিন্তু ঝড়ে ধানগাছগুলো মাটিতে শুয়ে পড়েছে। এতে করে ধানের অন্তত ৩০ ভাগ ক্ষতি হবে। অনেক ধান ঝরেও গেছে। এছাড়া ঝড়ে লিচু, কলা এবং পেঁপেরও ক্ষতি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কৃষকরা। এতে করে শত শত কৃষক এবার ক্ষতিরমুখে পড়বেন বলেও জানান ওই কৃষক।