আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত মানুষদের (রোহিঙ্গা) প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখছে চীন। বাংলাদেশে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে চীনের রাষ্ট্রদূত জেং জু এ কথা বলেন।
বুধবার রাজধানীর বারিধারায় চীনা দূতাবাসে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থ নেই। তাই আমরা নিরপেক্ষ থেকে সমস্যাটি সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সহযোগিতা করছি। গত নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফরকালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানে তিন দফা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। দুই দেশই এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছিল। এছাড়া চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ দূত সুং ও শিয়াং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আস্থা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে একাধিকবার সফর করেছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রাখাইন ইস্যুতে বাংলাদেশের উদ্বেগ আমরা অনুধাবন পারি। সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাস্তুহারা মানুষদের পাশে দাঁড়ানোয় বাংলাদেশেকে আমরা স্বাগত জানাই। উদ্বাস্তু প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপ ইতিবাচক দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সই, যৌথ কার্যকরী গ্রুপ গঠন এবং উদ্বাস্তু প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার – উভয়ের বন্ধু এবং প্রতিবেশী দেশ হিসাবে চীন এই সমঝোতাকে এগিয়ে নেয়া ও উদ্বাস্তু প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ।
রাখাইন ইস্যু নিরসনে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারকে উৎসাহিত করতে সব ধরনের সুযোগ চীন কাজে লাগাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের দেয়া তালিকা যাচাই-বাছাই করে রোহিঙ্গাদের যথাশিগগির ফেরত নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। প্রত্যাবাসন শুরু করার সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে চীন ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ থেকে ফিরে যাওয়া বাস্তুহারা মানুষদের থাকার জন্য রাখাইন প্রদেশে ১০০টি স্থানান্তরযোগ্য বাসা নির্মাণ করেছে চীন। রাখাইনে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের জন্য মিয়ানমারকে সহযোগিতা করছি আমরা।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যকে সামনে রেখে সম্প্রতি নেইপিডোতে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে মধ্যে উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রাখবে বলে চীন বিশ্বাস করে। এটি প্রতিবেশী দুই দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্থানীয় মানুষের জীবনমান বাড়াতে সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া উদ্বাস্তুদের চীন তিন কোটি আরএমবি মানবিক সহায়তা দিয়েছে। বর্ষাকালকে সামনে রেখে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। চীন এ ব্যাপারে যথাসাধ্য সহায়তা দিতে চায়।
দৈনিকদেশজনতা/ এফ আর