নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ তখনই উন্নত হবে যখন দেশের প্রত্যেক নাগরিককে মানসম্মত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারবে। কিন্তু আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বাজারমুখী না হওয়ার কারণে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে পারছে না। ফলে পড়ালেখা শেষ করেও বহু শিক্ষার্থীর চাকরি মিলছে না। এমনটাই মনে করেন ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী।
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি, কোচিং বাণিজ্য, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসহ শিক্ষাব্যবস্থার নানা অসঙ্গতির বিরুদ্ধেও কথা বলেন তিনি।
চাকরিতে ৫৫ শতাংশ প্রচলিত কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গে ঢাবির সাবেক এই উপাচার্য মনে করেন, বড়জোড় ১০ শতাংশ কোটা রাখা যেতে পারে। এছাড়া গড় আয়ু বাড়ায় চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর পক্ষেও মত দেন তিনি।
একে আজাদ চৌধুরী বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন দরকার আছে। কিন্তু আমূল পরিবর্তন দরকার আছে কিনা সেটা আমি বলতে পারবো না। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা সনদ নির্ভর হয়ে পড়েছে। লেখাপড়া শেষে সনদ পেলেই শিক্ষার্থী মনে করে বড় ধরনের শিক্ষিত হয়ে পড়ছে। এমনকি পরীক্ষাগুলোও সেই পদ্ধতিতেই নেয়া হয়। পড়ানোও হয় সেই পদ্ধিতেই।
‘এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সনদ বিক্রি করছে এমনটা না বললেও তারা যে সদনের অপব্যবহার হচ্ছে এটা বলতে পারি। হাতেগোনা কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বাদে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জ্ঞানভিক্তিক সমাজ গড়তে যে শিক্ষার প্রয়োজন তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে- এটা বলবো না। তবে অনেকটাই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের নীতি নৈতিকতা মূলবোধ শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারছে না। মূলবোধ সংকটের কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। মূলবোধ সংকটের কারণে সামাজে দুর্নীতি অনিয়ম বেড়ে যাচ্ছে। আজ দেশের ব্যাংকের হাজার হাজার দুর্নীতির খরব পত্রপত্রিকায় আসছে, এটার মূল কারণ হলো দুর্নীতি। নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা পরিবার ও স্কুল-কলেজ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। পাঠবইয়ের কিছু অংশ নৈতিকতার বিষয় সংশ্লিষ্ট করলেই হবে না। বিভিন্ন ধর্মীয় গুরুদের জীবনী পাঠ্যবইয়ে সংযুক্ত করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে একে আজাদ চৌধুরী বলেন, কোটা ব্যবস্থা একদম থাকবে না, এমনটা নয়। সর্বসাকুল্যে ১০ শতাংশ কোটা রাখা যেতে পারে। এগুলো যেমন- শারীরিক প্রতিবন্ধী, উপজাতি, নারী এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য রাখতে হবে। কোটার জন্য যোগ্য ও মেধাবীরা কোনোভাবেই যেন বঞ্চিত না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মেধাবী ও যোগ্যতাসম্মত লোক বঞ্চিত হলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
দৈনিকদেশজনতা/ এফ আর