২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:২২

মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৬টি খসড়া আইন অনুমোদিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে ছয়টি আইনের খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে। আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এই আইনের খসড়াগুলো অনুমোদন করা হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংকালে এ কথা জানান।

বৈঠকে শুরুতেই নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় ৫১ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় এবং ভাস্কর ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণীর মৃত্যুতে দুটি শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে মন্ত্রিসভা। এরপর জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় এবং সিঙ্গাপুরের দ্য স্ট্যাটিসটিকস নামের একটি সংস্থার জরিপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্থান পাওয়ায় মন্ত্রিসভায় অভিনন্দন জানানো হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

এরপর বৈঠকে ছয়টি আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে সার (ব্যবস্থাপনা) (সংশোধন) আইন, ২০১৮ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। নতুন আইনে জাতীয় সার প্রণীতকরণ কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৫ থেকে বাড়িয়ে ১৭ জন করা হয়েছে। একইসঙ্গে সার ভেজালের শাস্তিও বাড়ানো হয়েছে। আগের আইনে শাস্তি ছিল ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা। নতুন আইনের ৮ ধারায় দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

বৈঠকে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৮ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১৯৯২ সালের সরকারি এক রেজুলেশনের মাধ্যমে এটি পরিচালিত হতো। এখন এটিকে আইনে পরিণত করা হয়েছে। এটি নতুন একটি আইন। নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগের সব জেলা নিয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী অঞ্চল বোঝাবে।

তবে এর বাইরে সরকার গেজেটের মাধ্যমে যে কোনও জেলা এবং অঞ্চলকে বরেন্দ্র বহুমুখী অঞ্চলের আওতাধীন ঘোষণা করতে পারে। কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উপদেষ্টা পরিষদ থাকবে, যেখানে ওই অঞ্চলের সকল সংসদ সদস্য, বিভাগীয় কমিশনারদ্বয়, জেলা সমূহের জেলা প্রশাসকগণসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য থাকবেন।

বরেন্দ্র অঞ্চলের দৈনন্দিন কাজ পরিচালনার জন্য আরেকটি কমিটি গঠন করা হবে। যার সভাপতি থাকবেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। তার নেতৃত্বে এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন। নতুন আইনে মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে এই কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়াও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন ২০১৮ এর খসড়াতেও নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ১৯৮৪ সালের সামরিক শাসনামলে একটি অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে এটি পরিচালিত হতো। এখন এটিকে আইনে পরিণত করা হচ্ছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশক্রমে সামরিক শাসনামলের সকল অর্ডিন্যান্সগুলোকে আইনে পরিণত করা এবং ইংরেজি ভাষায় প্রণীত আইন এবং অর্ডিন্যান্সকে বাংলায় রূপান্তরের নির্দেশনা থাকায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই আইনে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো, নতুন এই আইনে প্রাণীর বর্জ্য গবেষণার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাণী গবেষণা ইনস্টিটিউটকে। আগের অর্ডিন্যান্সে এটি ছিল না।

বৈঠকে জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিমালা-২০১৮ এর খসড়াতেও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এটি হচ্ছে, ব্রডবেইজ নীতিমালা। এটি বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষায় পাশাপাশি থাকবে।

১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু এ ব্যাপারে একটি নীতিমালা দিয়েছিলেন। এখন এটিকে আরও বড় করা হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, দেশের সংকটময় মুহূর্ত ও যুদ্ধকালীন সংকটে সব সামরিক, আধা সামরিক বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অপারেশনাল কমান্ডে একসঙ্গে কাজ করবে। রাষ্ট্রের সংকটময় মুহূর্ত বলতে যা বোঝাবে, তা সরকার কর্তৃক ঘোষিত হতে হবে। এটি এই নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে।

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া ৫ম খসড়া আইনটি দ্বিপক্ষীয়। ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরের জন্য addendum-1 to `Inter agency agreement between global center for nuclear energy partnership’ ( জিসিএনইপি), ডিপার্টমেন্ট অফ অটোমিক এনার্জি, গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড বাংলাদেশ অটোমিক এনার্জি কমিশন (বিএইসি), মিনিস্ট্রি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, অর্ডিন্যান্স অব পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ অন কো অপারেশন রিগার্ডিং রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রোজেক্ট ইন বাংলাদেশ এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল অ্যান্ড মেইন্টেন্যান্স ড্রেজিং কম্পোনেন্টি জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প (এমপিপি) হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

দৈনিক দেশজনতা /এন আর

প্রকাশ :মার্চ ১৯, ২০১৮ ৯:৩৫ অপরাহ্ণ