২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ২:৩২

রোহিঙ্গারা আইএস-জঙ্গিতে আগ্রহী হতে পারে : নাজিব রাজাক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে ভয়াবহ গণহত্যা ও নির্যাতন চালানো হয়েছে সেসব মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট বলে চালিয়ে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক।

মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীর আশংকা, এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান না হলে সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গারা ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। যদি সেখানে (রাখাইন) এমন কিছু হয় তাহলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে শনিবার অনুষ্ঠিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী এ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তার আংশকার কথা জানান। এসময় তার সঙ্গে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ও দেশটির কার্যত সরকার প্রধান (ডি-ফ্যাক্টো) অং সান সু চি একই মঞ্চে ছিলেন।

রাখাইনের সংকটে হাজার হাজার মানুষ আশাহীন হয়ে উঠছে উল্লেখ করে নাজিব রাজাক বলেন, ‘এসব মানুষেরা  (রোহিঙ্গা) কোনও ভবিষ্যত দেখছে না। এর ফলে এটা মৌলবাদীদের উর্বর ভূমি বা এর সংশ্লিষ্ট গাষ্ঠীগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে।’

আসিয়ানের দেশগুলোকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে অবশ্যই সহযোগিতা বাড়াতে হবে উল্লেখ করে মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সংকটে থাকা এলাকাগুলোতে যেখানে তারা নির্বিঘ্নে বেড়ে উঠে কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ পেতে পারে সেখানে তাদের পুনরুত্থান ঘটতে পারে। যে কারণে রোহিঙ্গা সংকটকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকটা বলে এড়ানোর সুযোগ নেই। আসিয়ান সম্মেলন চলাকালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে শনিবার রোহিঙ্গা গণহত্যা বিরোধী বিক্ষোভ চলে ।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের ভয়াবহ দুর্দশা গোটা অঞ্চলকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে এবং রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ স্থায়ী সমাধানে তার দেশ (মালয়েশিয়া) সাহায্য করতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান নাজিব রাজাক।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার কথিত হামলার অভিযোগ তুলে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্ব পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। খুন-ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের মতো ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের এমন দমন-পীড়নকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ।

মিয়ানমার সরকার ও দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা নিধণের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। রাখাইন প্রদেশের বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের বসতবাড়িতে বর্তমানে বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে বলে সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে। এসব অভিযোগের মাথায় দক্ষিণ-পূর্ভ এশিয়ার দশ দেশের জোট আসিয়ানের সম্মেলনে যোগ দিতে অস্ট্রেলিয়া সফর করছেন অং সান সু চি।

তার এ সফরকালের মধ্যেই শনিবার অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত পাঁচজন মানবাধিকার আইনজীবি সু চির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে মেলবোর্নের বিচারিক আদালতে মামলার আবেদন করেছে। যদিও দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমোদন না মিললে সে আবেদন খারিজ হয়ে যেতে পারে।

দৈনিকদেশজনতা/ এফ আর

প্রকাশ :মার্চ ১৮, ২০১৮ ৩:৩৭ অপরাহ্ণ