স্পোর্টস ডেস্ক:
শ্রীলংকার বিপক্ষে খরা ঘোচানো ঐতিহাসিক জয়ে সরে গেছে সংশয়ের মেঘ। গুঁড়িয়ে গেছে মানসিক বাধার দেয়াল। মিলেছে আত্মবিশ্বাসের রসদ। ফিরে পাওয়া সেই বিশ্বাসের ভেলায় চেপেই এবার আরেকটি চ্যালেঞ্জ জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।
চ্যালেঞ্জটা ‘ক্ষুদে’ ক্রিকেটে ভারত-জুজু কাটানোর। ত্রিদেশীয় টি ২০ সিরিজ নিদাহাস ট্রফির পঞ্চম ম্যাচে আজ দেখা হবে বাংলাদেশ ও ভারতের। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হবে খেলা। শ্রীলংকার কাছে হার দিয়ে সিরিজ শুরুর পর টানা দুই ম্যাচ জিতে ফাইনালের পথে এক পা বাড়িয়ে রেখেছে ভারত। অন্যদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের কাছে টানা দুই হারে ফাইনালে ওঠার হিসাবটা জটিল হয়ে গেছে স্বাগতিক শ্রীলংকার।
বাংলাদেশ রয়েছে মাঝামাঝি অবস্থানে। ভারতের কাছে হেরে নিদাহাস ট্রফিতে শুরুটা ভালো না হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলংকার গড়া ২১৪ রানের পাহাড় টপকে ধূসর ছবিটা রঙিন করে তুলেছে বাংলাদেশ। আজ ভারতকে হারাতে পারলে আরাধ্য ফাইনাল চলে আসবে দৃষ্টিসীমায়। হারলেও সুযোগ থাকবে। তখন শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প থাকবে না। অন্যদিকে আজ জিতলেই ফাইনালে চলে যাবে ভারত।
আর হেরে গেলে তাকিয়ে থাকতে হবে শুক্রবারের বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচের দিকে। ভারতের সুবিধা হল নেট রান রেটে এগিয়ে তারা। তিন ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে লীগ টেবিলের শীর্ষেও তারা। বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার ঝুলিতে আছে সমান দুই পয়েন্ট। তবে এক ম্যাচ কম খেলা বাংলাদেশ নেট রান রেটে শ্রীলংকার চেয়ে পিছিয়ে আছে। ফাইনালের সমীকরণটা আরও জটিল হয়ে উঠবে আজ বাংলাদেশ জিতলে এবং শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে হারলে।
তখন তিন দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকা দল দুটি পাবে ফাইনালের টিকিট। রান রেটের বিষয়টিও তাই আজ মাথায় রাখতে হবে বাংলাদেশকে। তবে আগে ভারতের গেরো খোলার চ্যালেঞ্জটা জয় করতে চান মাহমুদউল্লাহরা। টি ২০ সংস্করণে দু’দলের আগের ছয় ম্যাচের প্রতিটিতেই জিতেছে ভারত। ২০১৬ টি ২০ বিশ্বকাপে ভারতের কাছে এক রানের সেই অবিশ্বাস্য হারের দুঃস্মৃতি কখনই ভোলা সম্ভব নয়। তবে সেই দুঃস্মৃতি ভারতকে ফিরিয়ে দেয়া খুবই সম্ভব। মানসিক বাধাটা কেটে গেছে আগের ম্যাচেই। যে বাংলাদেশ আগে কখনও টি ২০ তে দুইশ’ করতে পারেনি, তারাই কিনা শ্রীলংকার বিপক্ষে ২১৫ রানের কঠিনতম লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে। রাঙিয়েছে ইতিহাসের পাতা। ৩৫ বলে ৭২* রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংসে ঐতিহাসিক এ জয়ের নায়ক ছিলেন মুশফিকুর রহিম। দুই ওপেনার লিটন দাস ও তামিম ইকবালের ব্যাটেও ছিল দুঃসাহসী আত্মবিশ্বাসের ছটা।
হন্যে হয়ে একটি জয়ের খোঁজে থাকা বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত সেই অমৃতের স্বাদ পেয়ে মানসিকভাবে খোলনলচে বদলে গেছে। ভারতকে হারানো এখন আর অসম্ভব মনে করছেন না মাহমুদউল্লাহরা। ভাগ্যের দিকে তাকিয়ে না থেকে বাকি দু’ম্যাচ জিতে নিজেরাই নিশ্চিত করতে চান ফাইনাল। ভারত জয়ের মিশনে নামার আগে সেটাই জানালেন লংকা-বধের নায়ক মুশফিক, ‘যে আত্মবিশ্বাস দরকার ছিল, আগের ম্যাচ থেকেই সেটা পেয়ে গেছি আমরা।
আশা করি, এটা ধরে রাখতে পারব। এখনও দুটি ম্যাচ আছে আমাদের। সেভাবেই আমরা পরিকল্পনা করছি। যদি তা বাস্তবায়ন করতে পারি, আশা করি, পরের ম্যাচ দুটি জিতে আমরাই ফাইনালে উঠব।’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি