নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারি চাকরিতে কোটার সংখ্যা কমাতে আন্দোলনকারীদের দাবিতে সরকার সাড়া না দিলেও নতুন সিদ্ধান্তে কোটাধারীর তুলনায় সাধারণ পরীক্ষার্থীরাই বেশি নিয়োগ পাবেন। কারণ, নানা ধরনের মিলিয়ে ৫৬ শতাংশ কোটা থাকলেও সব পদে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায় না। কিন্তু এতদিন সেই পদগুলো শূন্য থাকত। তবে নতুন নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্য প্রার্থী না থাকলে সাধারণ পরীক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই নিয়োগ দেয়া হবে। এতে কোটাধারীর চেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বেশি নিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তবে কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনাসহ নান দাবিতে আন্দোলনে নামা শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্তে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়। তাদের দাবি, কোটা আরও কমাতে হবে। কোটা সংস্কারে আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায়, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সাধারণ মেধা তালিকা থেকেই নিয়োগ দেয়া হবে। এতদিন এই পদগুলো শূন্য রাখা হতো। এমনকি শূন্য পদ পূরণে বিশেষ বিসিএস নিয়েও সব পর পূরণ করা যায়নি।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের একজন হেমায়েত উদ্দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এই ছাত্র বলেন, ‘সরকারে সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই, আমাদের পাঁচ দাবি একটি একটি পূরণ হয়েছে। তবে আমাদের আরও চারটি দাবি রয়েছে। সেগুলোর জন্যও আন্দোলন চলবে।
তবে এই মুহূর্তে কোটা কমানো বা বাতিলের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান। তিনি বলেন, ‘সরকারের চিন্তা কোটা বহাল থাকবে। তবে মেধাবীরা যাতে বঞ্চিত না হয় এজন্য আমরা এ সিদ্ধান্ত (কোটাধারী পাওয়া না গেলে সাধারণ পরীক্ষার্থীদের থেকে নিয়োগ) নিয়েছি।’
সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেভাবে বেশি নিয়োগ পাবেন
গত বছরের ১৭ অক্টোবর প্রকাশ করা ৩৬ তম বিসিএসের ফলাফলে নিয়োগের সুপারিশ করা হয় দুই হাজার ৩২৩ জনকে। তবে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায়নি বলে কোটার ৩৬৬টি পদ শূন্য ছিল। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী যে দুই হাজার ৬৮৯টি পদের জন্য পরীক্ষা নেয়া হয় তার মধ্যে কোটার ছিল এক হাজার ৫০৫টি। কিন্তু পাওয়া যায় ১১৩৯ জনকে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী কোটায় যোগ্য কাউকে পাওয়া না গেলে কোনো পদ ফাঁকা রাখা হবে না। ওই বছর বাকি ৩৬৬ জনকে মেধা তালিকা থেকে নিয়োগ দেয়া হলে কোটা ছাড়া সাধারণ পরীক্ষার্থীরা নিয়োগ পেতেন এক হাজার ৫৫০ জন। অর্থাৎ প্রায় ৫৮ শতাংশ নিয়োগ পেতেন মেধা তালিকা থেকে। তবে সিদ্ধান্তটা নতুন হওয়ায় এই শূন্য পদগুলো পূরণ করা হবে চলমান ৩৭ তম বিসিএস থেকে। ৩৭ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। এখন মৌখিক পরীক্ষা চলছে।
এই নিয়োগ পরীক্ষায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছিল এক হাজার ২২৬টি পদ পূরণে। এর সঙ্গে ৩৬তম বিসিএসের শূন্য ৩৬৬টি পদ যোগ করে মোট এক হাজার ৫৯২টি পদ ৩৭ তম বিসিএস থেকে পূরণের সুপারিশ করেছে পিএসসি।
অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, প্রতি বছরই কোটার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন ফাঁকা থাকে। ফলে নিয়োগের এই নীতিমালা কার্যকর হলে মেধা তালিকা থেকেই বেশিরভাগ প্রার্থী নিয়োগ পাবেন।
দৈনিকদেশজনতা/ এফ আর