স্বাস্থ্য ডেস্ক:
সোনালি মিনিকেট চাল একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। যা খেলে রক্তে শর্করা এবং সুগার কমে যায়। ফলে ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। আর এই চাল আবিষ্কার করেছেন জিন বিজ্ঞানী এবং ধান গবেষক ড. আবেদ চৌধুরী। এছাড়াও তিনি সিলেটি আউশ ধান চেংড়ি, ধুমাই, বাউরস এবং কাচালতের জন্য পেয়েছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
ড. আবেদ চৌধুরী জানান, তিনি বিলুপ্তপ্রায় ৩শ’ জাতের ধান উদ্ধার করেছেন। সেই ৩শ’ জাতের ধান তিনি একসঙ্গে গবেষণা এলাকা সিলেটের কুলাউড়ায় নিয়মিত চাষ করছেন এবং বছরে ৩ বার সেই ফসল ঘরে তুলছেন। গত ১৫ বছর ধরে তিনি এই কাজ করে আসছেন।
বাংলাদেশে দিনদিন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাই তিনি চিন্তা করলেন, কী করে এর একটা সমাধান করা যায়। সেই চিন্তা থেকে আবেদ চৌধুরী আবিষ্কার করেন সোনালি মিনিকেট চাল। এটি পরে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি অনুমোদন করে। তার এইচকেজি এগ্রো থেকে প্রস্তুত বিশেষ এই চাল খেলে কার্বোহাইড্রেড এবং সুগার কমে যায়। ফলে ডায়াবেটিস অনেক নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
মূলত এই চাল তিনি উদ্ভাবন করেছেন অন্যান্য সাদা বা চিকন চালের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার জন্য। যা মেশাতে হবে মূল চালের সঙ্গে ১৫ শতাংশ করে। এতে ওই সাদা চালের সুগার বাড়ার ক্ষমতা অনেক কমে যায়। কিন্তু সেই চালের সঙ্গে যে সোনালি মিনিকেট মেশানো হয়েছে তা বোঝা যায় না।
এর বাজারমূল্য অন্যান্য চালের মতো। তবে এই চাল তারা সাধারণ বাজারজাত করছেন না। কেউ চাল কিনতে চাইলে সরাসরি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, তারা ঠিকানা অনুযায়ী তা পৌঁছে দেবেন। এজন্য ০১৭৬৬-৩৭০৪৩৬ এবং ০১৭৬৬-৩৭০৭০৩ নম্বরে ফোন করে যোগাযোগ করতে পারবেন।
জানা যায়, ড. আবেদ চৌধুরী সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর গ্রামের সন্তান। তিনি মৌলভীবাজার সরকারি স্কুল থেকে এসএসসি, নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করেন। পরে তিনি হাভার্ডসহ বিশ্বের অনেক নামিদামি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন এবং সেখানে শিক্ষক-গবেষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৭৯ সাল থেকে দেশের বাইরে ছিলেন। ২০০৩ সাল থেকে নিয়মিত দেশে আসা-যাওয়া শুরু করেন। ২০০৭ সাল থেকে তিনি পুরোপুরি বাংলাদেশে চলে আসেন। কুলাউড়ায় তার পৈতৃক নিবাসে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের যেসব গবেষকের নাম নোবেল পুরস্কারের মনোনয়নের জন্য তালিকায় রয়েছে ড. আবেদ চৌধুরী তাদের একজন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ