২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:৫৪

সুন্দরবনে মরছে ২৭৮ প্রজাতির মাছ

খুলনা প্রতিনিধি:

অসাধু জেলেরা সুন্দরবনের নদীগুলোতে অবৈধভাবে এক ধরনের মশারির জাল পেতে ২৭৮টি বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনার মৃত্যু ঘটাচ্ছে। যা ভবিষ্যতে জীব-বৈচিত্রের জন্য বড় ধরনের হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে পরিবর্তন ডটকমের কাছে এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন মংলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌস আনসারি।

তবে বসে নেই মংলা কোস্টগার্ডও। কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মংলা সদর দপ্তর) জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মিনারুল হক জানান, সুন্দরবনে মাছের পোনা ধরার খবরে অভিযান অব্যাহত রয়েছে তাদের। সবশেষ ২ মার্চ খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার অন্তর্গত গ্যাংরশি বাজার সংলগ্ন এলাকায় কোস্টগার্ড অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ২০ লাখ পিস পাইসা পোনাসহ একটি ইঞ্জিনচালিত বোট জব্দ করেছে। জব্দকৃত মালামালের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের সন্ধ্যা নদীতে অভিযান চালিয়ে পাঁচ লাখ পারশে পোনা, এক লাখ মশারি জাল ও এক লাখ কারেন্ট জালসহ চন্নু শেখ নামে এক জেলেকে আটক করেছেন তারা। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সুন্দরবনের বিভিন্ন স্টেশন থেকে সাদা মাছ পরিবহন ট্রলারের অনুমতি নিয়ে সাদা মাছ আহরণের পরিবর্তে সুন্দরবনের পশুর নদী, আলোর কোল, দুবলার চর, বাটলুরচর, ছাচানাংলা, আগুন জ্বালা, কালির চর, গেড়া চালকি, বজবজা, হংসরাজ, আন্দারমানিক, ঢাংমারী, ছিচখালী ও মজ্জত নদী থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত বিপুল পরিমাণ চিংড়ি ও পারশে মাছের পোনা আহরণ করছে জেলেরা।

এক্ষেত্রে তারা এক ধরনের মশারির জাল ব্যবহার করছেন। আর যাতে আটকে মৃত্যু ঘটছে অন্যান্য প্রজাতির মাছেরও। মংলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌস আনসারি বলেন, ‘২০০৩ সালের মৎস্য আইনের ২৮৯ ধারা অনুযায়ী উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ি পোনাসহ সকল ধরনের পোনা মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এরপরেও অনেকে মশারির জাল ব্যবহার করছে। যা কঠিন অপরাধযোগ্য।

তিনি আরো জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীদের গবেষণা অনুযায়ী সুন্দরবনে মশারির জালে মাছ ধরার কারণে ২৭৮ প্রজাতির মাছের পোনার মৃত্যু ঘটে। যা উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য এ মৎস্য কর্মকর্তার। পূর্ব সুন্দরবনের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শাহীন কবির বলেন, সুন্দরবনের ভেতরে সব ধরনের মাছের পোনা ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জেলেরা বনবিভাগের অফিস থেকে সাদা মাছের পারমিটের আড়ালে পোনা নিধন চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি। এসব অসাধু জেলেদের আমরা আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নিচ্ছি।

পরিবেশবিদ ড. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এভাবে পোনা শিকার করার কারণে সুন্দরবনের জলজ সম্পদ হুমকির মুখে পড়ছে। এতে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ কমে দেশে আমিষের ঘাটতি দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি 

প্রকাশ :মার্চ ৪, ২০১৮ ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ