২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:১৯

ইউরোপজুড়ে শৈত্যপ্রবাহে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

উত্তর মেরু থেকে আসা হার্টমুট নামের শৈত্যপ্রবাহে ইউরোপজুড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় বিভিন্ন দেশে মৃতের সংখ্যা ৬০ ছাড়িয়ে গেছে। গতকাল ফ্রান্সে পাহাড়ি এলাকায় তুষার ধসে চারজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন একজন।

ভারী তুষারপাত এবং প্রচণ্ড শীতে মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সাইবেরিয়া থেকে ধেয়ে আসা বাতাসের কারণে রাতের গড় তাপমাত্রা ধারণার চেয়েও কমে যাওয়ায় মহাদেশটির বেশিরভাগ অঞ্চলেই সৃষ্টি হয়েছে চরম বিপর্যয়। হিমঝড় ও তীব্র তুষারপাতের কারণে বহু গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সুইজারল্যান্ড, ব্রিটেন ও বেলজিয়ামসহ কয়েকটি দেশে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিমান চলাচল। টানা তুষারঝড়ের কারণে ব্রিটেন বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার শত শত ফ্লাইট বাতিল, মহাসড়ক প্রায় বন্ধ এবং ট্রেন সিডিউলে বিপর্যয় ঘটেছে। হাজার হাজার স্কুল বন্ধ করে দিতে হয়েছে এই পরিস্থিতিতে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সেনাবাহিনী নামিয়েছে ব্রিটেন। সড়কে বরফে আটকে পড়া গাড়ি ও চালকদের উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী। কিছু এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করে। তুষারপাত অব্যাহত রয়েছে। ট্রেন চলাচলেও আছে চরম বিঘ্নতা। অতিপ্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ ও আবহাওয়া অফিস।

ইতালিতে গত তিন দিনের তুষারঝড়ে জনজীবন চরম আকার ধারণ করেছে। মহাসড়কগুলোতে আটকে আছে হাজার হাজার গাড়ি। বাতিল করা হয়েছে বিমানের শতাধিক ফ্লাইট। সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তীব্র শীতের পাশাপাশি দেশটিতে অন্যদিকে বইছে নির্বাচনের গরম হাওয়া। আগামীকাল রবিবার ইতালির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

পোল্যান্ডে শীতের মাত্রা চরম আকার ধারন করেছে। শুধু পোল্যান্ডেই এ পর্যন্ত ২৫ জনেরও বেশি লোক অতিরিক্ত ঠান্ডায় মারা গেছে। এদের অধিকাংশই বৃদ্ধ এবং গৃহহীন হয়ে গেছে। স্পেনে গত দশ বছরের রেকর্ড তাপমাত্রা ধারন করেছে সে দেশের আবহাও দপ্তর। দশ বছর পর তুষারপাত দেখা গেছে মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনায়। ফিনল্যান্ডে সাধারণত এ সময়ে মাইনাস ১৫/২০ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকলেও এ বছর শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে বলে জানান ফিনল্যান্ড প্রবাসী কমিউনিটি নেতা মাইনুল ইসলাম।

এছাড়া জার্মান, পর্তুগাল, ডেনমার্ক, সুইডেন, রুমানিয়, বুলগেরিয়াসহ সারা ইউরোপের একই অবস্থা বিরাজ করছে। তুষারপাতে ইউরোপের অধিকাংশ দেশে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ঠাণ্ডায় দরিদ্র, গৃহহীন ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বড় ধরনের বিপদ বয়ে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :মার্চ ৩, ২০১৮ ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ