২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১০:০০

ইসির তালিকায় দ্বৈত ভোটার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরও ভোটার তালিকায় দ্বৈত ভোটার থেকে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার এক দম্পতি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনে ব্যর্থ হয়ে দ্বৈত ভোটার হয়েছেন বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, তারা উভয়ে এনআইডি সংশোধনের জন্য সোনালী ব্যাংকের চট্টগ্রামের বোয়ালখালী শাখায় ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর টাকা জমা দেন। এরপর তারা সেগুলো নির্বাচন কমিশনে জমা দেন। যা এখনো তদন্ত রিপোর্ট চাহিত অবস্থায় রয়ে গেছে।

জানা যায়, সংশোধনীতে স্বামী মোহাম্মদ মুছা জন্ম সাল চেয়েছিলেন ১৪ মে ১৯৫৬ আর তার এনআইডিতে জন্ম সাল ছিল ৭ মার্চ ১৯৬৮ এবং স্ত্রী তৌফিয়া খানমের সংশোধনীতে চাহিত জন্ম সাল ছিল ১৯ এপ্রিল ১৯৬৩ সাল। আর তার এনআইডিতে জন্ম সাল ছিল ২০ আগস্ট ১৯৬৭। এছাড়া তার ইংরেজি নাম Towfiya Khanam এর পরিবর্তে Tafia Khanom চেয়েছিলেন। কিন্তু সংশোধনে ব্যর্থ হয়ে এসব সংশোধন করে দ্বিতীয়বার ভোটার হন তারা।

সূত্র জানায়, স্বামী মোহাম্মদ মুছার (প্রথমটি 19681511250572662 ও দ্বিতীয়টি 19561521207000002) এবং তার স্ত্রী তৌফিয়া খানমের (প্রথমটি 19671511250572663 ও দ্বিতীয়টি 19631521207000001) দু্ইটি করে এনআইডি চালু রয়েছে।

এ কাজে সহযোগিতার জন্য বোয়ালখালী উপজেলার একজন অফিস সহকারীকে শাস্তি স্বরুপ কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাচন অফিসে বদলী করা হয়। কিন্তু তারা যে দ্বৈত ভোটার হয়েছেন সে বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, কমিশন এতো সচেতন হওয়ার পরও কিভাবে দ্বৈত ভোটার করা হচ্ছে বিষয়টি আমাদের মাথায় আসে না। তবে যে বা যারাই দ্বৈত ভোটার হোক না কেনো, তারা ধরা পড়বেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ  বলেন, কারো দুইটি এনআইডি সচল রয়েছে এমন প্রমাণ থাকলে আমরা সেটি তদন্ত করে দেখব এবং ব্যবস্থা নেবো।

তিনি বলেন, বর্তমানে দ্বৈত ভোটার হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্বৈত ভোটার হয়ে যায়। এর মূল কারণ হলো প্রথমবার ভোটার হওয়ার পর অনেকেই এনআইডি পান না। সেটি না পেয়ে একটি ধারণা জন্মে যে, আমি যে ভোটার হলাম সেটি মনে হয় ঠিক মতো কাজে লাগেনি। তখন তারা আরেক জায়গায় গিয়ে ভোটার হন। এসব ক্ষেত্রে আমাদের এখানে যে এএফআইএস (অটোমেটেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম) মেশিন আছে, কেউ দ্বৈত ভোটার হলে সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে ধরা পড়ে।

দ্বৈত ভোটার ধরা পড়লে প্রাথমিকভাবে একটি তদন্ত করি। তদন্তে যদি দেখা যায় তার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই বা অজ্ঞতার কারণে হয়েছে। তখন আমরা প্রথমটি রেখে দ্বিতীয়টি বাদ দিয়ে দেই। আর যদি এর পেছনে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য দেখি, তখন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেই এবং এ বিষয়ে যদি আমাদের কর্মকর্তারা সহযোগিতা করে থাকেন, তার বিরুদ্ধেও আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি, যোগ করেন সচিব।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, এবার দ্বৈত ভোটার হওয়ার বিষয়টি কড়া নজরদারিতে রেখেছে কমিশন। এবার হালনাগাদে ২ লাখের উপরে দ্বৈত ভোটার শনাক্ত করে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কোনো নাগরিক একাধিক স্থানে ভোটার হয়েছেন সন্দেহ হলেই সেটি মাঠপর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করারও নির্দেশ দিচ্ছে ইসি।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮ ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ