নিজস্ব প্রতিবেদক :
ব্যাংকে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ভোগান্তি কমাতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আর মোবাইল না থাকলে সেসব মুক্তিযোদ্ধাকে মোবাইলও কিনে দেবে মন্ত্রণালয়।
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের মহেশখালীতে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার কথা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বসেই এ ভাতা পাঠানো কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী।
আগামী জুলাই মাসের মধ্যে সব মুক্তিযোদ্ধা যাতে মুঠোফোনে তাদের ভাতা পান, তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানা গেছে। এ টাকা যেখান থেকে ইচ্ছা মুক্তিযোদ্ধারা তুলতে পারবেন। এ সেবা খাতে সরকারের আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। পরীক্ষামূলক এ প্রকল্প চলার এক মাস পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সারা দেশে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অনেক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি স্থানীয় ব্যাংক থেকে ২০-২৫ কিলোমিটার দূরে। এত দূরে মুক্তিযোদ্ধাদের যাতায়াতে অনেক কষ্ট পেতে হয়। আবার ব্যাংকে যাওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বয়সজনিত কারণে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হয় মুক্তিযোদ্ধাদের । ব্যাংকের কর্মকর্তারাও তাদের সম্মান দেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, আমাদের কাছে অনেক মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ করেছেন, ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে গিয়ে তাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। ভিড়ের কারণে অনেক সময় ভাতা না নিয়ে ফেরত যেতে হয়। বয়সের কারনে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশির ভাগই এখন অসুস্থ। ষাটের বেশি বয়স হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক চলাফেলা করতে পারেন না। সব দিক বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলি, এ পদ্ধতি শুরুর মাধ্যমে তাও বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রত্যেক সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পান। এই হিসাবে তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রতি মাসে সম্মানী ভাতা বাবদ সরকারের ব্যয় হয় ১৮৪ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা । এর বাইরে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের ভাতা ৩৫ হাজার টাকা। ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা মাসিক ৩০ হাজার টাকা, বীর উত্তমদের ভাতা ২৫ হাজার টাকা, বীর বিক্রমদের ভাতা ২০ হাজার টাকা এবং বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্তদের ভাতা দেয়া হয় ১৫ হাজার টাকা।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ