বিনোদন ডেস্ক:
সম্পর্কের ভাঙা-গড়া সমাজের সব অংশেই হয়। তারকাদের ক্ষেত্রে বলা হয়, সম্পর্ক হয় যেন ভাঙার জন্য। যদিও কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারকাদের সম্পর্কের বিষয়াদি এতটাই আলোচনায় থাকে যে, সমাজের অন্য অংশের সম্পর্ক-বিচ্ছেদকে ছাপিয়ে যায়। এই যেমন; ঢালিউডের হিট জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। তাদের প্রেম-বিয়ের খবর অনেকগুলো বছর ছিল আড়ালে। প্রকাশ্য হতে না হতেই বাজল বিচ্ছেদের ঘণ্টা।
অপু বিশ্বাসকে তালাকের নোটিশ পাঠানোর তিন মাস পূর্ণ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। এক দফা সালিশ বৈঠকে অপু সিটি কর্পোরেশনের অফিসে হাজির হলেও শাকিবের কোনো সাড়া নেই। শোনা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও হাজির থাকবেন না তিনি। অপুও সংসারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ, তাদের বিচ্ছেদ চূড়ান্ত। দুই তারকা সম্পর্ক প্রকাশ্য হওয়া থেকে বিচ্ছেদের গড়ানোর পুরো ঘটনা পরম্পরা পুরোটাই চমকে ভরা।
২০১৬ সালের মাঝামাঝিতে হঠাৎ আড়ালে চলে যান অপু বিশ্বাস। শাকিব একাধিকবার জানান, নায়িকার বিষয়ে কিছুই জানেন না। এমনকি বিয়ে-সন্তানের গুজবও বারবার অস্বীকার করেছেন। ২০১৭ সালের প্রথম থেকে ‘অপু ফিরছেন’ এমন খবর শোনা যায় ঢালিউডে। ১০ এপ্রিল সন্তান কোলে হাজির হলেন টিভি চ্যানেলে। সরাসরি সম্প্রচার হওয়া ওই অনুষ্ঠানে দাবি করেন, শাকিব খানের সঙ্গে ২০০৮ সালে বিয়ে হয় তার। ২০১৬ সালে জন্ম নিয়েছে ছেলে আব্রাম খান জয়।
আরো জানান, বিয়ে ও সন্তান হওয়ার খবর শাকিবের ক্যারিয়ারের কারণেই চেপে রেখেছিলেন। কিন্তু নায়কের অবহেলার কারণে প্রকাশ্যে সন্তান নিয়ে হাজির হতে বাধ্য হয়েছেন। অবশ্য এ ঘটনার পেছনে আরেক নায়িকা শবনম বুবলিকে দায়ি করা হয়। শাকিবের বিপরীতে অভিষেক হওয়া এ নায়িকা ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘ফ্যামিলি টাইম’। সে ছবির মধ্যমণি ছিলেন শাকিব। এ নিয়ে বুবলিকে ফোন করে কটু কথা শুনিয়ে দেন অপু্। এর কিছুদিন পরই আসেন টিভি লাইভে।
অপুর টিভিতে আসা একদমই মানতে পারেননি শাকিব। প্রথমে ছেলেকে স্বীকার করলেও অপুর দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। এমনকি পাল্টা টিভি লাইভেও আসেন। পরে অবশ্য জানান, অপুর দায়িত্ব নেবেন। কিন্তু তাদের সম্পর্ক কখনোই ঠিক হয়নি। এরপর তাদের মাত্র একবার একত্রে দেখা যায়। মাস গড়াতেই দুরত্বের বিষয়টি আর গোপন থাকেনি। নানা অনুষ্ঠানে শাকিব প্রসঙ্গে অপুর মন্তব্য এমনটা জানান দেয়। যদিও নায়িকা বারবার সংসার করার কথাই বলছিলেন।
এদিকে জয়ের প্রথম জন্মদিনের কার্ডে শাকিব ছাড়াই ছেলেন সঙ্গে নিজের ছবি ছাপান অপু। এর সমালোচনা করেন শাকিব। অক্টোবরে নিকেতনে অপুর বাসায় ছেলেকে দেখতে গিয়ে শাকিব অভিযোগ তোলেন, জয়কে ঘরে তালাবন্ধ করে গৃহকর্মীর কাছে রেখে ভারতে গেছেন অপু। অপু অভিযোগ নাকচ করে বলেন, বড়বোনের কাছে ছেলেকে রেখে যান তিনি। জরুরি চিকিৎসার কারণেই দুদিনের জন্য ভারতে যেতে হয়েছে তাকে।
কিছুদিন না যেতেই আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলামের মাধ্যমে ২২ নভেম্বর অপুর বাসার ঠিকানায় তালাকনামা পাঠান শাকিব। এরপর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন দুজনকে সালিশি বৈঠকে ডাকে। প্রথমবার বৈঠকে অপু হাজির হলেও শাকিবের তরফ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি সাফ সাফ জানিয়ে দেন, অপুর সঙ্গে আর নয়।
অপু ২০০৪ সালে আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। এরপর ২০০৬ সালে পরিচালক এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে নায়িকা হিসেবে শাকিবের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। ২০০৬ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই জুটি ৭০টির মতো জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ