নিজস্ব প্রতিবেদক:
হাসানুর রহমান (২৯) একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তার ফেসবুক আইডি ‘রকি ভাই’। প্রশ্নপত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে তার বেশ ‘খ্যাতি’ আছে। সে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপের এডমিন এবং গত ৪ বছর ধরে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। চলমান এসএসসি পরীক্ষার সময় প্রায় প্রতিটি পরীক্ষা শুরু আগে ভোরবেলা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তা বিভিন্ন শিক্ষকদের হাতে তুলে দিতো এই রকি ভাই।
পরে শিক্ষকরা দ্রুত সেই ফাঁস হওয়া প্রশ্ন সমাধান করে লিখিত উত্তরপত্র পরিচিত ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দিতেন। এই শিক্ষকদের মধ্যে একজন হলেন উত্তরখানের ক্যামব্রিজ হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তানভীর হোসেন (২৯)। সোমবার রাজধানীর উত্তরখান ও গাজীপুর এলাকা থেকে চার শিক্ষকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করার পর সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় র্যাব।
রকিভাই ও তানভীর ছাড়া গ্রেফতার অন্যরা হলেন- মো. সজীব মিয়া (২৬), মো. এনামুল হক (২৭), মো. ইব্রাহিম (২১)। তাদের মধ্যে মো. সজীব মিয়া ক্যামব্রিজ হাই স্কুলের হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক, মো. ইব্রাহিম এবং মো. এনামুল হক সৃজনশীল কোচিং সেন্টারের শিক্ষক।
র্যাব জানায়, হাসানুর রহমান ওরফে রকি ভাই পরীক্ষার শুরু হওয়ার দুই মাস আগে থেকেই ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ইমো-তে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মানি ট্রান্সফার নম্বর আইডি দিয়ে প্রশ্ন ফাঁসের প্রচারণা চালাতে শুরু করে। প্রচারণায় উল্লেখ থাকে যে, যারা প্রশ্ন পেতে চায় তারা ২০০০ টাকার বিনিময়ে তার গ্রুপের সদস্য হতে পারে।
পরীক্ষার দিন ভোরে হাসান ফাঁস হওয়া প্রশ্ন সংগ্রহ করে চক্রের অন্যান্য শিক্ষকদের হাতে তুলে দিত এবং তানভীরসহ অন্য শিক্ষকরা খুব কম সময়ের মধ্যে প্রশ্নপত্র সমাধান করে হাতে লেখা উত্তরপত্র সরবরাহ করতো।
গ্রেফতারকৃতরা ফাঁস হওয়া প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার নতুন কৌশল গ্রহণ করেছিল। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পারে, তারা ব্লাড ডোনেশন-১, ব্লাড ডোনেশন-২ এবং ব্লাড ডোনেশন-৩ নামে গ্রুপ খুলে সেখানে প্রশ্ন ফাঁস করতো, যাতে কেউ এগুলোকে প্রশ্ন ফাঁসের গ্রুপ মনে না করতে পারে।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে আটটি মোবাইল সেট ও একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়। ট্যাবে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের ভেতরে এসএসসি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে বলেও জানায় র্যাব।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ