২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:০৫

শরিকের তোপে মন্ত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আর্থিক ও শিক্ষা খাতে অনিয়মের জন্য অর্থমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাদের দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। আর সেই দাবি তুলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম শরিক ও জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) এক সদস্য। এর আগেও সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তোলেন স্বতন্ত্র এক সদস্য। ওই দুই মন্ত্রীকে নিরাপদ মন্ত্রণালয়ে সরিয়ে দেওয়ারও দাবি উঠেছে।

রোববার আর্থিক খাতে অনিয়মের জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে এখনই অবসরে যাওয়ার আহ্বান জানান জাপার সংসদ সদস্য জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু। তিনি বলেন, ‘আপনি ডিসেম্বরে অবসরে যাবেন। ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন আপনি রক্তক্ষরণ কনটিনিউ করবেন? আমাদের বাঁচান, দেশকে বাঁচান, জাতিকে বাঁচান। ডিসেম্বর পর্যন্ত ওয়েট করার দরকার কী? আপনি আজই অবসরে চলে যান।’

জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এ কথা বলেন। গত শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে নিরাপদ কোনো মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তরের আহ্বান জানান বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি. চৌধুরী)। ওই আহ্বানের পর গত শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বহুদিন এক জায়গায় থাকলে পচন আসে, সত্যিকার অর্থে জানি, আমি অবসরে যাচ্ছি। এ বছরের ডিসেম্বরেই অবসরে যাব।’

ওই বক্তব্যের জের ধরে রোববার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করেন কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, ‘দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। অর্থপাচার নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রথম পানামা পেপারসে নাম এলো, অর্থমন্ত্রী কোনো ব্যবস্থা নিলেন না। এরপর এলো প্যারাডাইস পেপারস নামসহ অনেক ব্যবসায়ীর নাম। তাতেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। ব্যাংক খাতে চলছে আতঙ্ক উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি। এই হচ্ছে মানি মার্কেটের অবস্থা।’

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পদত্যাগের দাবি তোলেন জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বানও জানান। প্রশ্নফাঁস ও ঘুষ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমি দাবি করছি, অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রী তার ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অনিয়ম স্বীকার করে নিয়ে পদত্যাগ করুন। না হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি, তাকে (শিক্ষামন্ত্রী) বরখাস্ত করে শিক্ষা খাতের উন্নতির জন্য গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য আপনি নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করুন।’ এ সময় সাংসদের অনেকে টেবিল চাপড়ে জিয়াউদ্দীনের বক্তব্যকে সমর্থন জানান।

এরআগে গত ৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘অতিকথন দোষে দুষ্ট আমাদের শিক্ষামন্ত্রীর অতিবিতর্কিত মন্তব্য সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। পত্রপত্রিকায় দেখেছি, মন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তাদের বলেছেন, ‘আপনারা সহনীয় পর্যায় ঘুষ খাবেন। ঘুষ খেতে না বলার নৈতিক সাহস আমার নেই। কারণ, আমি ঘুষ খাই, মন্ত্রীরা ঘুষ খায়।’ এই বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য মন্ত্রীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। তাকে অবশ্যই সংসদে দাঁড়িয়ে তার মন্তব্যের জন্য ব্যাখ্যা দিতে হবে।’

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮ ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ