বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক:
ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইন্সটিটিউটের রিপোর্ট অনুযায়ী এই খাতে বিশ্বের মোট বাজারের ১৬ শতাংশ বাংলাদেশের দখলে।
ফ্রিল্যান্সারদের নগদ সহায়তা দিতে চাইছে সরকার। এ বিষয়ে নীতিগত কাঠামো তৈরিতে চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক আউটসোর্সকে ক্যাশ ইনসেনটিভ দেয়ার তালিকায় রাখা হয়েছে। তারা সরকারের ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা বা ভর্তুকি পাচ্ছেন। এখন এ সহায়তা বা ভর্তুকি ব্যক্তি পর্যায়ে আউটসোর্সিং করা ফ্রিল্যান্সাররাও যেন পান তা দেখা হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এদিকে তথ্যপ্রযুক্তি রফতানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা বা ভর্তুকি দেয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক যে সার্কুলার দিয়েছে তাতে এ সহায়তা বা ভর্তুকি ব্যক্তি পর্যায়ে আউটসোর্সিং করা ফ্রিল্যান্সাররা পাবেন কিনা তা স্পষ্ট করা হয়নি।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার জানান, ‘আমরা যে ক্যাশ ইনসেনটিভটা দিচ্ছি তা ফ্রিল্যান্সারদের কাছে কেমন করে পৌঁছানো যেতে পারে- তা দেখা হচ্ছে। বিষয়টি এখনও খুব স্পষ্ট হয়ে আসেনি। আমরা চেষ্টা করব যাতে এই বিষয়টিও স্পষ্ট করা যায়, শুধু প্রতিষ্ঠানগুলো না, যারা ব্যক্তিগতভাবে ফ্রিল্যান্সিং করেন তারাও যাতে নগদ সহায়তাটা পেতে পারে।’ ‘এই ক্ষেত্রে নীতিগত যে ধরনের সহায়তা করা দরকার সে সহায়তা যেন আমরা করতে পারি তার সব চেষ্টা করা হচ্ছে’-বলছিলেন মন্ত্রী।
সরকার গত বছরই ফ্রিল্যান্সিং-আউটসোর্সিংয়ের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল। লক্ষ্য ছিল এটি পেশাদার খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং তা থেকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন। এতে আউটসোর্সিংয়ের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জের সঙ্গে সম্ভাবনাগুলো তুলে আনা, ফ্রিল্যান্সিংকে শৃঙ্খলায় আনা, পেশাদার ও দক্ষ জনবল তৈরি করা, প্রতিষ্ঠান তৈরির দিকনির্দেশনা থাকার থাকবে। বছরটির ২৭ মার্চ ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের নির্বাহী কমিটির সভায় এ কর্মপরিকল্পনা তৈরিতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল দেশের সফটওয়্যার খাতের শীর্ষ সংগঠন বেসিসকে। কথা ছিল তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় তিন মাসের মধ্যে এটি তৈরি করা। সেখানেও বিষয়টি তুলেছিলেন টাস্কফোর্স সদস্য মোস্তাফা জব্বার। নির্দিষ্ট সময় পর এটি তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন সেই সময়ের বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার। তবে পরে এটির গন্তব্য কোথায় হয়েছে বা কী অবস্থায় আছে তা জানা যায়নি।
সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকের অনেকে বলছেন, এটি তৈরি হলে ফ্রিল্যান্সিং পেশাদার খাত হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির পথে এক ধাপ এগিয়ে থাকত। এখন এই নগদ সহায়তার ক্ষেত্রেও নীতি তৈরি সহজ ও দ্রুত হতো। খাত হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংকে বেশ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। ২০ হাজার নারীসহ ৫৫ হাজার ফ্রিল্যান্সার তৈরিতে দেশব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ১০ হাজার বিশেষায়িত আউটসোর্সিং ফ্রিল্যান্সার তৈরির অ্যাডভান্স প্রশিক্ষণের উদ্যোগও নেয়া হয়েছে।
জানুয়ারিতে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের এক অনুষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ইতিমধ্যে ১৩ হাজার তরুণ-তরুণী এ প্রশিক্ষণ নিয়েছে। যাদের মধ্যে ১০ হাজার তরুণ-তরুণী অনলাইন মার্কেটপ্লেসে আউটসোর্সিং করে ৬ লাখ ডলারেরও বেশি আয় করেছে। ২০১৮ সালে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ পাবে ৪০ হাজার তরুণ-তরুণী।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর