আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ৬ বছর বয়সী শিশু জয়নবকে অপহরণ, ধর্ষণসহ খুনের দায়ে অভিযুক্ত ধর্ষক ইমরান আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী আদালত (এটিসি)। শনিবার পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুরের এক কারাগারের অভ্যন্তরে বিচারক সাজ্জাদ আহমেদ এই দণ্ড ঘোষণা করেন। ইমরান আলি অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দোষীসাব্যস্ত হয়েছেন এবং সবগুলোতে তাকে আলাদাভাবে মোট চারবার মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
পাকিস্তানি দৈনিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, একটি শিশুকে অপহরণ, ধর্ষণ, খুন ও ক্ষুদে শিশুর সঙ্গে অস্বাভাবিক চারটি অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ পাওয়া যাওয়ায় ধর্ষক ইমরানের ওই সাজা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আলীকে আরো ৭ বছরের কারাদণ্ড ও জয়নবের দেহ অপবিত্র করার দায়ে দশ লাখ পাকিস্তানি রুপি জরিমানা করা হয়েছে।
দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের পরামর্শক বলেছেন, তার দল অপরাধীকে বিচারের আওতায় এনেছে। তিনি আরো বলেন, অপরাধীকে কারাগারে বন্দি রাখতে অসংখ্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে পাঞ্জাবের সরকার।
পাঞ্জাব প্রদেশের বহুল আলোচিত ধর্ষণের এ মামলার রায় ঘোষণার পর তিনি বলেন, আমাদের বিচারবিভাগ বর্তমানে অন্যান্য দেশের ন্যায় মামলায় ডিএনএ নমুনা সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহার করে।
তিনি আরো বলেন, ধর্ষকের স্বীকারোক্তি সত্ত্বেও তারা অপরাধীকে ন্যায় বিচারের সুযোগ দিয়েছেন। মামলার সব কার্যক্রম বৈজ্ঞানিক উপায়ে প্রমাণিত হয়েছে। সাজার বিরুদ্ধে আপিলের জন্য ১৫ দিনের সময় পাবেন ধর্ষক ইমরান আলী।
কট লাখপাত কারাগারে ব্যাপাক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে জয়নব ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। জয়নবের বাবা রায় ঘোষণা সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ৫৬ প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি নেয়ার পর আদালতের বিচারকরা ধর্ষক ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের কাছে শিশু জয়নব ছাড়াও কাসুরের আরো ছয় শিশুকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন ইমরান।
পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুর এলাকার ছয় বছর বয়সী শিশু জয়নবকে ৪ জানুয়ারি অপহরণ করে ইমরান। ৯ জানুয়ারি শিশু জয়নবের মরদেহ কাসুরের একটি ময়লার ভাগাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
জয়নব অপহরণের সময় তার বাবা-মা সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করতে গিয়েছিলেন। পরে মেয়ের মৃত্যুর খবরে তারা দেশে ফিরে আসেন। ধর্ষক গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের দাফন সম্পন্ন করবেন না বলে পুলিশকে আল্টিমেটাম বেধে দিলেও দুই সপ্তাহ পর সন্দেহভাজন ইমরানের ডিএনএর সঙ্গে ধর্ষণের আলামতের মিল পাওয়া যায়।
গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয়রা ওই ধর্ষকের বাড়ি ঘেরাও করে। পরে রাতে পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এক সম্মেলনে ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান। একই সঙ্গে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ওই ধর্ষককে প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানান তিনি।
এসময় শাহবাজ শরীফ বলেন, জয়নবের পরিবার, পুরো দেশ ও তিনি নিজেও ধর্ষকের জনসম্মুখে ফাঁসি চান। এটাই সবার চাওয়া। ডন
দৈনিক দেশজনতা /এন আর