নিজস্ব প্রতিবেদক:
মংলা বন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি জানান, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) মংলা বন্দরে জাহাজ ভিড়েছে ৪৬৩টি, যা গত অর্থবছরের (২০১৬-১৭) একই সময়ের তুলনায় ৮৪টি বেশি।
উল্লিখিত সময়ে বন্দরে পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টন, যা বছরওয়ারি হিসাবে ১৩ লাখ ৫৩ হাজার টন বা ২৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়েছে। এ দুই খাতের প্রবৃদ্ধিতে স্বাভাবিকভাবেই বন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের পরিমাণও বেড়েছে। গত সাত মাসে বন্দর থেকে রাজস্ব এসেছে ১৫৬ কোটি ৭১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা, যা গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের তুলনায় ২৮ কোটি ৭ লাখ ২৪ হাজার টাকা বা ২১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি।
বিস্তারিত জানাতে গিয়ে বন্দরের এ প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আরো বলেন, গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে বন্দরে জাহাজ এসেছিল ৩৭৯টি। চলতি বছরের একই সময়ে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬৩। আলোচ্য সময়ে মংলা বন্দরে পণ্য উঠানো-নামানো হয়েছে মোট ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ছিল ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার টন। চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে মংলা বন্দর থেকে ১৫৬ কোটি ৭১ লাখ ৫৩ হাজার টাকার রাজস্ব আহরণ করেছে সরকার। গত অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্বের পরিমাণ ছিল ১২৮ কোটি ৬৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা। মূলত মংলা বন্দরে নতুন কিছু যন্ত্রপাতি সংযোজন ও বন্দরের অবকাঠামো সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ফলে জাহাজ চলাচল ও পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে এর সুফল পেতে শুরু করেছে মন্তব্য এ বন্দর কর্মকর্তার।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর চালনা পোর্ট নামে বন্দরটি যাত্রা করে। এরপর আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে শুরু করে বন্দরটি। আশি ও নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত এ বন্দরে বেশ কর্মচাঞ্চল্য ছিল। পরে বন্দরের কার্যক্রমে অব্যবস্থাপনা, শ্রমিক অসন্তোষ, কিছু ভুল পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতার কারণে বন্দরটি জৌলুস হারাতে থাকে। এতে ব্যবসায়ীরা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। কমতে থাকে বন্দরের রাজস্ব আহরণ। লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় বন্দরটি। জাতীয় অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়ে। ২০০৭ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক লোকসান টানতে হয় মংলা বন্দরকে।
২০০৮ সালের পর বন্দরের উন্নয়নে কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। পশুর চ্যানেল ও জেটি এলাকায় ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ গ্রহণ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ফের বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন। এতে বন্দরের আমদানি-রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মচাঞ্চল্য বাড়ছে। একই সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আহরণে আরো বেশি অবদান রাখছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি