অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাদেশের শ্রমখাতসহ অন্যান্য খাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি বিস্তৃতভাবে তুলে ধরেছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, খাবার পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতির বিষয় অগ্রাহ্য করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এছাড়া, রাজধানীর হাজারিবাগ এলাকার চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থের বিস্তৃতি শ্রমিক ও স্থানীয়দের ওপর প্রভাব ফেলছে- এ বিষয়েও সরকার অবজ্ঞা করছে বলে এতে দাবি করা হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জাতিসংঘের কমিটি অন ইকোনমিক, সোশাল অ্যান্ড কালচারাল রাইটস-এর ৬৩তম প্লিনারি সেশনে এ সম্পর্কিত একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বড় প্রভাব পড়ছে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ওপর। বলা হয়েছে বাল্যবিবাহ ও বৈষম্যমূলক ব্যক্তিগত আইনের অধীনে নারী ও কন্যাশিশুদের অধিকার বিঘ্নিত হচ্ছে।
এতে রোহিঙ্গা নারী ও কন্যাশিশুদের স্বাস্থ্য সুবিধার বিষয়টির গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়। রিপোর্টে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, বাংলাদেশের ভূগর্ভে পানিতে প্রাকৃতিকভাবেই আর্সেনিক সংক্রমণ রয়েছে। এতে গ্রাম এলাকায় বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষ পানীয় জলের মাধ্যমে আর্সেনিকে সংক্রমিত হচ্ছে। জাতীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় সংক্রমিত আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে বাংলাদেশের প্রায় ২ কোটি মানুষ।
ওই রিপোর্টে ২০১২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণা উদ্ধৃত করে বলা হয়, বাংলাদেশে আর্সেনিক সংক্রান্ত অসুস্থতায় মারা যান কমপক্ষে ৪৩ হাজার মানুষ।
এক রিপোর্টে বলা হয়, ২০০০ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে জন্ম নেয়া ১০ থেকে ৫০ লাখ শিশু মারা যেতে পারে আর্সেনিক সংক্রমণযুক্ত পানি পান করার কারণে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের তিনজন স্পেশাল র্যাপোর্টিউর একটি যৌথ চিঠি লেখেন। তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠিটি এর আগের বছর পাঠানো হয় বাংলাদেশ সরকারের কাছে। কিন্তু সরকার এখনো এ বিষয়ে কোনো জবাব দেয়নি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আরো বলেছে, বাংলাদেশ সরকার অব্যাহতভাবে হাজারিবাগে চামড়াজাত শিল্পে জোরপূর্বক শ্রমে নিযুক্ত করা ও পরিবেশগত আইন প্রয়োগে অব্যাহতভাবে ব্যর্থ হচ্ছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ রপ্তানিখাত থেকে যে আয় করে তার মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই আসে গার্মেন্ট শিল্প থেকে। এ খাত থেকেই জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে শতকরা ১০ ভাগের বেশি অর্থের জোগান আসে। এ খাতে কর্মরত ৪০ লাখের বেশি মানুষ। তাদের বেশির ভাগই নারী। সম্প্রতি দুটি বড় বিপর্যয়ে কয়েক শত শ্রমিকের জীবন গেছে। এর মধ্যে তাজরিন কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ও সাভারে রানা প্লাজা ধস। প্রায় সব গার্মেন্ট শ্রমিক নাজুক পরিবেশে কাজ করেন। নিয়োগকারীরা ইউনিয়নবিরোধী কৌশল প্রয়োগ করেন। যথাযথ বেতন পান না গার্মেন্ট শ্রমিকরা।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর